ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে সে সম্পর্কে যদি জানতে চান তবে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। ঠোঁটফাটা কমানোর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যা আপনাদের এই শীতের সময়ে অনেক উপকারে আসবে।
তাই আর্টিকেলটি না টেনে মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে ঠোঁট ফাটা সম্পর্কে জানতে পারবেন যে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে ঠোঁট ফাটা দূর করা যায়। ঠোঁট হাটে কোন ভিটামিনের অভাবে সে সম্পর্কেও ধারণা পাবেন।
ভূমিকা
শীতকালে ঠোট ফাটে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। তাই আমাদের আগে জানতে হবে ঠোঁট কোন ভিটামিনের অভাবে ফাটে। সেই ঘাটতিটা পূরণ করতে হবে এবং ঘরোয়া উপায়ে কিছু উপাদান ঠোঁটে দিলে ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শীতকালে ঠোঁট বেশি ফাটে যা খুব কষ্টকর। তাই ত্বক ও ঠোঁটকে ভালো রাখতে সুস্থ রাখতে আমাদের জানতে হবে সে বিষয়ে সম্পর্কে।
শীতকালে ঠোঁটে গ্লিসারিন লাগানো হয় কেন
শীতকাল আসতেই আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। ত্বকে রুক্ষতা স্বাভাবিকভাবেই অসুস্থতা অনুভব হয়। শীতকালে ত্বক এবং ঠোট রুক্ষ হয়ে পড়ে ঠোটফাটা শুরু করে তাই প্রয়োজন হয় বাড়তি যত্নের। প্রয়োজন পড়ে সবচেয়ে বেশি যা ঠোঁটকে এবং ত্বককে শুষ্ক থেকে রক্ষা করে। ঠোট রুক্ষ শুষ্ক হওয়া মানে ঠোঁট ফাটা। বাজারে অনেক রকম ময়শ্চেরাইজ পাওয়া যায় যা কেমিক্যাল যুক্ত।
আরো পড়ুন:দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
যা ব্যবহার করে অনেকের ত্বকে সমস্যা হতে পারে। তাই আপনারা আস্থা রাখতে পারেন গ্লিসারিন এর উপরে। গ্লিসারিন একটি প্রাকৃতিক উপাদান। যেটা প্রাকৃতিকভাবেই পাওয়া যায় যাব্যবহারে ত্বকের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া করেনা।গ্লিসারিন একটি তরল পদার্থ যার কোন গন্ধ নেই উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। বাজারে গ্লিসারিন বিভিন্ন রকম নামের পাওয়া যায় খাঁটি গ্লিসারিন দেখে কেনা প্রয়োজন।
যখন আপনারা যে কোন কাজ করে বাড়িতে আসবেন বা বাড়িতে থেকেই কাজ শেষ করে মুখ পরিষ্কার করে গ্লিসারিন মেখে নিতে পারেন। গ্লিসারিন ব্যবহার করার আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ঠোট ও ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। রুক্ষতা দূর করবে এবং ত্বকের পরিষ্কার রাখবে। রুক্ষতা দূর করতে ত্বককে ময়শ্চেরাইস করে রাখতে গ্লিসারিন ব্যবহার করা প্রয়োজন।
এতে আপনার ত্বক সহজেই নরম রুক্ষতা দূর হবে এবং ত্বককে পানি সহজে ধরে রাখতে সাহায্য করবে। ত্বকের কোষের আদ্রতা বজায় রাখে। যেকোনো ত্বকের জন্য এটি উপযোগী আপনারা গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। শীতকালে গোলাপ জলের সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বক ও ঠোঁটের ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ত্বক হবে নরম উজ্জ্বল টানটান এবং ঠোঁটফাটা দূর করবে।
ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
ভিটামিন বি: এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যায়। ভিটামিন বি যেমন রাইবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, পাইরিডক্সিন এবং কোবালামিন এইসব ভিটামিন এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। তাছাড়াও শরীরে সব ধরনের ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফাটা হতে পারে।
ভিটামিন সি: ভিটামিন সি এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যায়। ভিটামিন সি কে অ্যাসকরবিক এসিড ও বলা হয়ে থাকে।ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন করতে সহায়তা করে। যা আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:ওমেগা-৩ হচ্ছে স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এতে ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা ঠোঁট ও ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এর অভাবে ঠোঁটের শুষ্ক ভাব হতে পারে।
আরো পড়ুন:খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা
জিংক: জিংক এর অভাবেও ত্বক ও ঠোট শুষ্ক ও ফাটল ধরতে পারে।জিংক ক্ষত নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ঠোঁট ফাটা কমানোর ঘরোয়া উপায়
শীতকাল আসতেই আমাদের অনেকেরই ঠোঁট ফাটা শুরু হয়ে যায়। ঠোঁট ফাটার সমস্যা অনেকেরই এই শীতকাল জুড়েই থাকে। ঠোঁট ফাটলে অনেক সমস্যা হয়ে যায়। কথা বলতে সমস্যা হয়, হাসতে পারা যায় না, এমনকি ঠোঁট দিয়ে রক্ত পড়ে ব্যথা করতে থাকে। তাই আমাদের এই সমস্যা নিরাময়ের কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি জেনে রাখা দরকার। যা থেকে অতি সহজেই আমরা যেন ঠোঁট ফাটা দূর করতে পারি।, তাহলে আর দেরি না করে চলুন ঝটপট জেনে নি।
- অলিভ অয়েল ঠোঁটে দিয়ে হালকা ভাবে মেসেজ করতে পারেন।
- ভ্যাসলিন অনেক উপকারী । ঠোঁটে ভ্যাসলিন লাগালে ঠোঁট নরম থাকে ঠোঁটফাটা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।
- শীত কালে ডাই লিপিস্টিক এর পরিবর্তে ময়স্টারাইজ লিপস্টিক লাগানো দরকার। কারণ ড্রাই লিপস্টিক ব্যবহার করলে ঠোঁটের অনেক সমস্যা দেখা দেয় ঠোঁট ফাটা বেশি হয়ে যায়। তাই এই সময় লিপবাম ময়শ্চেরাইজার লিপস্টিক গুলা ব্যবহার করা দরকার।
- রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে গ্লিসারিন দিয়ে মেসেজ করুন তারপর ঘুমান। সকালে উঠে ধুয়ে নিন এতে আপনার ঠোঁট অনেক নরম থাকবে।
- ঠোঁটে দুধ ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটে দুধ দিয়ে কিছুক্ষণ মেসেজ করে রেখে দিন।১৫-২০ মিনিট পরে ধুয়ে নিন। এতে আপনার ঠোঁট নরম উজ্জ্বল হবে।
- শসা রস প্রতিদিন একবার করে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট নরম থাকে। শসা রস করে অথবা শসা কে চটকিয়ে স্ক্রাপ তৈরি করেও লাগাতে পারেন। লাগানোর ১০-১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ঠোঁট নরম ও ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করবে।
- গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারেন কারণ গ্রিনটিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে গ্রিন টি অনেক উপকারী। যখন আপনারা অনেকেই গ্রিন টি ব্যবহার করবেন তখন এক কাপ গরম পানিতে দিয়ে তুলে নিয়ে সেটি ত্বকে এবং ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। প্রতিদিন কমপক্ষে একবার করে করতে পারেন অনেক ভালো উপকার পাবেন।
ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করার উপায়
শীতকালে অনেকের ঠোঁটের মরা চামড়া উঠা সমস্যা থাকে। এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে চাইলে অবশ্যই সপ্তাহের অন্তত দুইবার লিপ স্ক্রাব করা দরকার। এই স্ক্রাবের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনারা ঠোঁটের মরা চামড়া ওঠা দূর করতে পারেন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে বিভিন্ন রকম ভাবে এই স্ক্রাব তৈরি করা যায়। তাহলে আসুন জেনে নিই এই স্ক্রাবগুলো কিভাবে তৈরি করতে হয়।
গ্রিন টি স্ক্রাব
আমরা অনেকেই গ্রিন টি খেয়ে থাকি। স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী তেমন আমাদের ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে দূষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। গ্রিন টির সঙ্গে আধা চামচ টক দই, চিনি ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করে নেন। এবারে মিশ্রণ টিকে ঠোঁটে মেসেজ করতে থাকুন। দেখবেন কিছুক্ষণ পরে ঠোঁটের মরা চামড়া গুলো উঠে যাবে। এতে আপনার ঠোঁটের মরা চামড়া উঠবে এবং ঠোঁট ফাটাও দূর করবে।
কফি স্ক্রাব
কফি খাওয়ার পাশাপাশি কফি দিয়ে আমরা অনেকেই রূপচর্চা করে থাকি। কফির সাথে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে এটি স্ক্রাব তৈরি হয়ে গেল। করে লাগিয়ে মেসেজ করলে ঠোটের চামড়া উঠা ও ফাটা দূর হবে।
আরো পড়ুন:অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
ব্রাউন সুগার স্ক্রাব
ব্রাউন সুগার শরীরের জন্য উপকারী তেমন ত্বকের জন্য উপকারী। ব্রান্ড সুগারের সাথে মধু ও নারিকেল তেল মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মিশ্রণটিকে ভালো করে ঠোটে মেসেজ করতে হবে। কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে নিলে দেখা যাবে ঠোঁট নরম ও কোষের মরা ভাব দূর হয়ে গেছে।
ঠোঁটের কালচে দাগ দূর করার উপায়
অনেকেরই ঠোঁট কালো হয়ে যায়। এমন অবস্থায় অনেককেই ভাবে যে এই ঠোঁট মনে হয় আর আগের অবস্থায় ফিরে আনা সম্ভব নয়। একটু কষ্ট করলেই আপনারা ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে পারেন।ঘরোয়া কিছু উপকরণ এর মাধ্যমে এই ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করে গোলাপি আবহাওয়া আনা সম্ভব। কিন্তু সময় সাপেক্ষে। তাহলে চলুন আমরা জেনে নিই কি কি উপকরণের মাধ্যমে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ঠোটের কালচে ভাব দূর করা যায়।
লেবুর রস ও চিনি: লেবুকে কেটে নিতে হবে এখন লেবুর কাটা অংশের দিকে চিনি লাগে আস্তে আস্তে ঠোঁটের উপরে ঘষতে থাকুন। দুই থেকে তিন মিনিট এভাবেই ঘষতে থাকুন। এভাবে ঘষতে থাকলে চিনি ঠোঁটের মরা কোষ গলা তুলে দিতে সাহায্য করবে এবং লেবু ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করবে কারণ এখানে চিনি স্ক্রাইবের কাজ করে।
টমেটো রস: ব্যবহার করেও ঠোটের কালচার ভাব দূর করা যায়। প্রতিদিন অন্তত দুইবার টমেটো রস ঠোঁটে লাগিয়ে মেসেজ করতে থাকুন এতে আপনার ঠোট হবে উজ্জ্বল।
দুধ বা দুধের সর: টক দই, দুধ বা দুধের সর অন্তত দুইবার ঠোঁটে প্রতিদিন লাগিয়ে মেসেজ করতে থাকুন। দুধে রয়েছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা ঠোঁটকে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে।
গোলাপজল ও অলিভ অয়েল: গোলাপ জল ও অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে লাগে মেসেজ করুন। এটি প্রতিদিন করতে থাকুন তাহলেই বুঝতে পারবেন ঠোঁটের পার্থক্য এসেছে।
শেষ কথা
আমাদের অনেকের ঠোঁট ফাটে। আমাদের জানা দরকার ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে। তাহলে আমরা সেই ভিটামিন বলা ঘাটতি পূরণ করতে পারব। ঠোঁট আমাদের বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবে ফাটে তাহলে সে ভিটামিন গুলো গ্রহণ করে আমাদের ঠোঁট ফাটা দূর করতে পারি এবং কিছু ঘরোয়া উপায়েও ঠোঁট ফাটা দূর করতে পারি।
আরো পড়ুন:গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারাও উপকৃত হয়েছেন। তাহলে আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজন এবং অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করুন। নিয়মিত আমার আর্টিকেলগুলো পড়ার জন্য এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;
comment url