ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম
ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা কি জানেন? টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন? যদি জানতে চান তাহলে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে আমারে আর্টিকেলে আলোচনা করেছি।
যেটি পড়ে আপনারা অতি সহজেই বুঝতে পারবেন টক খাওয়ার উপকারিতা কতটা রয়েছে। এবং টক দই খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কেও জানতে পারবেন। টক দই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। যেটি শরবত হিসেবেও খাওয়া যায়। টক দই দিয়ে বিভিন্ন রকম শরবত বানানো যায় আবার অনেক রকম রান্নার কাজেও টক দই ব্যবহার করা যায়।
ভূমিকা
টক দই অনেক রকম ভিটামিন ও পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। সবচেয়ে বড় উপকার করে যেটি সেটি হল ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিছুটা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তবে যদি সঠিক নিয়মে টক দই খাওয়া যায় তবে আমাদের ক্ষতির দিকটা চেয়ে উপকারী দিকটাই বেশি হয়। ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সঠিকভাবে পড়ে আপনারা যদি টক দই খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং ওজনও কমবে।
ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই আছেন রোগা চিকন হঠাৎ করেই তাদের স্বাস্থ্য বেড়ে গেছে। আবার অনেকেই জন্মগত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। মোটা শরীর হলে বিভিন্ন রকম রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। তাই অনেকেই চিকন রোগা হতে চান সেক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম উপায় রয়েছে। আর শরীর মোটা হয়ে গেলে কমাতে সময় লাগে। সঠিক ডায়েট চার্ট এবং ব্যায়ামের প্রয়োজন হয়।
আরো পড়ুন:বিটরুট পাউডার এর দাম কত
এমন কিছু খাবার ডায়েট চাটে রাখা দরকার যেগুলো দ্বারা পেট ভরবে কিন্তু ফ্যাট বাড়বে না। ওজন কমাতে সাহায্য করবে। টক দই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। টক দই খেলে অনেক উপকার মিলে। অনেকেই টক দই খেয়ে থাকে ওজন কমানোর জন্য কিন্তু কিভাবে খেলে ঠিকমতো ওজন কমবে সেটা জানে না। চলুন তাহলে জেনে নিই ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম।
চিয়া বীজ দিয়ে টক দই
ওজন কমাতে চিয়া বীজ খেলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এখন ডায়েটিসিয়ানরাও ওজন কমানোর জন্য জন্য চিয়া বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ওমেগা-৩, পটাশিয়াম, লবণ, আয়রন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি আছে। ওজন কমানোর জন্য আপনারা চিয়া বীজ এর সাথে টক দই মিশে নানা রকম ফল ওদুধ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি কে সব রকম উপাদান দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ডার করে নিয়ে খেলে ভালো হয়।
টক দইয়ের সঙ্গে ফল
ফল স্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর। সিজনারি ফল রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য ভালো। আবার অনেক রকম ফল রয়েছে সিজনের না হলেও সেগুলোও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। টক দই যেমন আমাদের উপকারী তেমন আমাদের ফলের সাথে যদি এই টক দই মিশিয়ে খাওয়া যায় তবে অনেক উপকার আসে। আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
অনেক রকম ফল রয়েছে যেমন আপেল, কলা, তরমুজ, ডালিম, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, আঙ্গুর, ড্রাগন, ইত্যাদি ফলগুলো কেটে টক দই এর সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিলে একটি আদর্শ খাবার তৈরি হয়ে যাবে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও ফাইবার। যা খেলে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে সাথে ওজনও কমতে সহায়তা করবে।
ওটস এর সঙ্গে টক দই
ওজন কমাতে হলে অনেকেই ওটস খাওয়ার কথা বলে থাকে। এই ওটস যদি টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয় তাহলে অনেক উপকারে আসে। আপনারা যারা ওটস খান তারা যদি প্রতিনিয়ত টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে কিছু ফলের দিয়ে খেতে পারেন তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো হবে তার সাথে ওজন কমবে।
বাদামির সঙ্গে টক দই
টক দই এর সাথে অনেক রকম ফল মিশিয়ে যেমন খাওয়া যায় তেমন ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া যায়।তাই খেজুর, আখরোট এবং ড্রাই ফ্রুটস একসাথে নিয়ে তাতে টক দই মিশিয়ে একটি খাবার তৈরি করে নেন। এই খাবারটি অনেক উপকারে আসবে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য।
সবজির রায়তা দিয়ে টক দই
রায়তা বানানো খুবই সহজ। রায়তা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার। বিভিন্ন রকম ফল দিতে পারেন রায়তা বানানোর জন্য। টমেটো শসা পিঁয়াজ কুচি করে নিয়ে তার সাথে জিরা গুড়া মরিচ কুচি করে কাটা চাট মসলা এবং টক দই দিয়ে মিশিয়ে বানিয়ে নিন রায়তা। ওজন কমাতে অনেক উপকারী একটি খাবার।
টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
টক দই খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। খাবার পরে টক দই অনেকেই পাতে খেয়ে থাকে। টক দই শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত টক দই খেতে তাই অনেকেই পছন্দ করেন। টক দইয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, ফসফরাস, প্রোটিন ফাইবার ইত্যাদি উপাদান। নিয়মিত টক দই খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়। টক দই হজমে ভালো কাজ করে। যাদের দুধ খেলে হজমে সমস্যা হয় তারা টক দই খেতে পারেন। টক দই খাওয়ার উপকারিতা অনেক আসুন আমরা টক দইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নি।
আরো পড়ুন:থ্যালাসেমিয়া কি কেন হয় লক্ষন ও প্রতিরোধে করনীয়
টক দই খাওয়ার উপকারিতা
- পেটে যে কোন সমস্যা দূর করতে টক দই খাওয়া যায়। অনেকেরই হজম শক্তিতে সমস্যা রয়েছে। নিয়মিত টক দই খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে। টক দই খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এসিডিটি থাকলে তা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
- যাদের আলসারের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও টক দই খেলে অনেক উপকার পাবে। টক দই নিয়মিত খেলে আলসারের ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ওজন কমাতে টক দই বড় ধরনের একটি ভূমিকা পালন করে আসছে। টক দই খেলে অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা থাকে না। কারণ টক দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন থাকায় পেট ভরে থাকে অতিরিক্ত খাবার চাহিদা থাকে না। ক্ষুধা কম লাগে। এতে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে না।
- যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য টক দই খুব উপকারী একটি খাবার। হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- বিভিন্ন রকম চর্মরোগ থেকে টক দই মুক্তি দেয়। বিভিন্ন রকম ত্বকের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
- টক দুই থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে যার কারণে শরীরের হাড় মজবুত থাকে এবং দাঁত শক্ত থাকে।
- যাদের মুখে ঘা থাকে তারা টক দই খেতে পারেন। আবার এই টক দই মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। টক দই ও মধু একসাথে মিশিয়ে যদি মুখের ঘায়েল লাগানো যায় তবে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
টক দইয়ের অপকারিতা
টক দই খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। আবার এই টক দই খেলেই শরীরের অপকারও হয়। অতিরিক্ত পরিমাণ যদি টক দই খাওয়া হয় তবে শরীরে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যাদের ল্যাক্টোজ খেলে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য সমস্যা হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা যদি এই টক দইয়ের সাথে চিনি মিশিয়ে খেয়ে থাকে তবে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পাবে।
আবার অনেকে ঠান্ডা লাগার সমস্যা হয়ে থাকে। যদি টক দই ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা অবস্থাতে খায় তবে ঠান্ডা জনিত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনারা টক দই খেলে অবশ্যই খেয়াল করে খাবেন যেন উপকারের বদলে অপকারী ক্ষতির দিক বেশি না হয়ে যায়।যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে খাবেন। নতুবা অতিরিক্ত টক দই খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
টক দই রেসিপি
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন একবাটির টক দই খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ টক দই রয়েছে অনেক উপকার। কিছু রান্নার রেসিপিতেও টক দই ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক সময় বাড়িতে টক দই থাকে না। বিভিন্ন রকম উপায়ে টক দই বানানো যায়। টক দই বানানো খুবই সহজ অল্প কিছু উপাদান দিয়েই বানানো যায়। চলুন আর দেরি না করে ঝটপট জেনে নি টক দই বানানোর রেসিপি।
গরুর দুধ দিয়ে টক দই বানানোর রেসিপি
উপকরণ
- তরল দুধ দেড় লিটার
- টক দই চার টেবিল চামচ
- গুড়া দুধ আদা কাপ
যেভাবে তৈরি করতে হবে
তরল দুধ একটি পাত্রে নিয়ে চুলার উপরে দিয়ে জ্বাল করতে থাকুন।দুধ জাল করতে থাকুন এর মধ্যে থেকে একটা কাপে অল্প পরিমাণ গরম দুধ নিয়ে তার সাথে গুড়া দুধ মিশিয়ে নেন। এরপর বাকি দুধের সঙ্গে তাও মিশিয়ে দিন। দুধ জ্বাল দিতে দিতে অর্ধেক হয়ে আসলে চুলা রাস্তা বন্ধ করে দেন। এবার দুধ ঠান্ডা করে নিয়ে তার সাথে ফেটিয়ে রাখা চার টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে দিন।
তবে খেয়াল রাখবেন দইয়ে যেন কোন রকম পানি না থাকে। এবার যে পাত্রে দই বসাবেন সেই পাত্রে ঢেলে দিন।তবে দই বসানোর ক্ষেত্রে মাটির পাত্র হলে ভালো হয়। ৮ থেকে ৯ ঘন্টা অপেক্ষা করুন এরপর ফ্রিজে রেখে দেন তাহলেই হয়ে যাবে আপনার টক দই বানানো। ফ্রিজ থেকে বের করে পরিবেশন করুন।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আপনারা অবশ্যই সঠিক নিয়মে টক দই খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনাদের ওজন এবং স্বাস্থ্য নিয়ে কোন চিন্তা থাকবে না। এবং বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যাও দূর হবে।
আরো পড়ুন:খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা
আশা করি আমারে আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন এবং অন্যান্যদের সাথে আমার এই আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন। এবং নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;
comment url