নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে আমারে আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। নারিকেলের শাঁসের উপকারিতা সম্পর্কেও আর্টিকেলে বিস্তারিত লিখেছি। অনেক গ্রামাঞ্চলের মানুষ ধারণা করে থাকে যে নারকেল মনে হয় বেশি খাওয়া ক্ষতিকর।
নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য অবশ্যই নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার।তাছাড়াও আমার এই আর্টিকেলে নারকেলের শাঁসের উপকারিতা সহ নারিকেল খাওয়ার নিয়ম ও বিভিন্ন রকম রেসিপি নাম বলা হয়েছে। আপনারা সেগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে জানতে পারবেন নারকেল দিয়ে কি কি বানানো যায়।

ভূমিকা

আমরা সকলেই নারিকেলের পানি খেতে পছন্দ করি তার সাথে নারিকেলের যে শাঁস থাকে সেটাও খেতে অনেক পছন্দ করি। নারিকেলের শাঁসে অনেক রকম পিঠা বানানো যায়। যেমন পুলি পিঠা নারিকেলের হালুয়া, নারিকেলের সন্দেশ, নারিকেলের, নাড়ু নারিকেলের, পায়ে বিভিন্ন রকম খাবার বানানো যায়।নারকেল বিভিন্ন রকম ভাবেই খাওয়া যায় তবে আমাদের জানতে হবে নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। কারণ অতিরিক্ত নারকেল খাওয়াও ভালো নয় তাই পরিমাণ মতো খেতে হবে।

নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার প্রত্যেকেরই খাওয়া উচিত।যে কোন ফলে অনেক পুষ্টি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারিকেল। নারিকেল এমন একটি ফল যার পানি এবং আঁশ দুটোই খুবই উপকারী। আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নারকেলের পানি অনেক উপকারী। তাই আমাদের মাঝেমধ্যে নারিকেল খাওয়াও প্রয়োজন রয়েছে। চলুন তাহলে আমরা জেনে নি নারিকেল সম্পর্কে উপকারী তথ্য।
  • নারিকেল খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ কারণেই ডায়াবেটিস রোগীদের নারকেল খাওয়া ভালো।
  • নারিকেলে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। যার ফলে হাড়ের উন্নতি করে। অস্ট্রিওআর্থারাইটিস হলে সেক্ষেত্রে নারিকেল খেলে এর ওপর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • নারিকেলে ক্যালসিয়াম থাকাই দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। দাঁত কে সুস্থ স্বাস্থ্য ময় রাখতে সাহায্য করে।
  • নারিকেলে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যার কারণে শরীরে ক্লান্তি ভাব দূর করে। শরীরকে করে এনার্জিযুক্ত।
  • নারিকেলের রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা দূর করে। তাই হৃদরোগের সমস্যার জন্য নারিকেল খুব উপকারী।
  • নারিকেল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।
  • ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগের জন্য খুবই উপকারী। নারকেল খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। স্তন ক্যান্সার করুন ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রকম ক্যান্সারের ক্ষেত্রে নারিকেল অনেক উপকারী।
  • ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে নারকেল অনেক উপকারে আসে। ত্বককে বলিরেখা পড়তে দেয় না ও সুন্দর কমল রাখতে সহায়তা করে। ত্বকের যে কোন দাগ দূর করতে সহায়তা করে।
  • মাথায় খুশকি ও শুষ্কতা দূর করতে নারিকেল তেল ব্যবহার অনেক উপকারী।নারিকেল তেল নারিকেল থেকেই তৈরি হয়। এই তেল ব্যবহার করলে চুল ঝলমল করে ও চুল পড়া বন্ধ হয়।
  • নারিকেলে ফাইবার থাকার কারণে ওজন কমতে সাহায্য করে।
প্রতিটা খাবারের উপকারী রয়েছে তেমনি আবার অপকারিও রয়েছে। নারিকেলের ক্ষেত্রেও অপকারিতা ও রয়েছে। নারিকেলের অপকারী দিকগুলো জেনে নেয়া যাক।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় নারকেল খেলে ওজন বাড়তে পারে। তাই অতিরিক্ত নারকেল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা নারিকেল খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় হ হজমে সমস্যা হয়।
  • নারিকেলের পটাশিয়াম থাকার কারণে যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের না খাওয়াই ভালো। তাদের নারকেল পানি থেকে দূরে থাকতে হবে। খাওয়া যাবেনা।
  • যাদের হজম শক্তিতে সমস্যা রয়েছে তারা নারকেল খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। কারণ নারকেল খেলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে যার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে।

নারিকেলের পুষ্টিগুণ

নারিকেলের পানিতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে তার সাথে নারিকেলের শ্বাসেও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম মালিক নারিকেলে রয়েছে ৩৫৪ ক্যালোরি,৩৫৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম,৩৩ গ্রাম ফ্যাট,২০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম,১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,৩.৩ গ্রাম প্রোটিন, ভিটামিন সি, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-৬ ও ভিটামিন বি-১২ রয়েছে।

নারিকেল খাওয়ার নিয়ম

নারিকেল সাধারণত গ্রামাঞ্চলের মানুষ বেশি খেয়ে থাকে। কারণ পিঠাপুলিতে নারিকেল বেশি খাওয়া হয়। আর গ্রামাঞ্চলের মানুষ শীতের সময় তো পিঠাপুলি তৈরি করবেই সেক্ষেত্রে নারিকেল বেশি ব্যবহার করা হয়। আবার বিভিন্ন রকম খাবার তৈরিতেও নারিকেল ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন জায়গার মানুষ করে থাকে। ভাদ্র মাসে তালের পিঠা বানানোর সময় নারকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

যে কোন পিঠা জাতীয় খাবারে বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে নারকেল দিলে সেই খাবারের স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়। অনেকে নারকেল মুড়ি দিয়ে খেতে পছন্দ করে। নারকেলের নাড়ু তো অনেক পছন্দের একটি খাবার। এটা বারোমাসি খাওয়া হয়। আর যারা হিন্দু তাদের তো পুজোর সময় নারকেল নাড়ু থাকতেই হবে। পুজোর সময় বিভিন্ন রকম নারুর সাথে নারকেল থাকে মুড়ি দিয়ে খেতে পছন্দ করে। 

আরো পড়ুন:করলার জুসের উপকারিতা ও অপকারিতা

পায়েস ও সেমাই রান্নায় নারিকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যে কোন পিঠা জাতীয় খাবারে বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে নারকেল দিলে সেই খাবারের স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়। অনেকে নারকেল মুড়ি দিয়ে খেতে পছন্দ করে। নারকেলের নাড়ু তো অনেক পছন্দের একটি খাবার। এটা বারোমাসি খাওয়া হয়। আর যারা হিন্দু তাদের তো পুজোর সময় নারকেল নাড়ু থাকতেই হবে। 

পুজোর সময় বিভিন্ন রকম নারুর সাথে নারকেল থাকে মুড়ি দিয়ে খেতে পছন্দ করে। পায়েস ও সেমাই রান্নায় নারিকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।নারিকেল দিয়ে বিভিন্ন রকম খাবার তৈরি করা যায়। যেমন নারিকেলের সন্দেশ, বাদশাহী নারিকেল চিকেন পরোটা, নারিকেল চিংড়ি, ক্ষীরের নারী কোয়েল নাড়ু, ইলিশ নারিকেল, কড়াইশুঁটি নারিকেল পরোটা,

নারিকেল পাটিসাপটা, নারিকেলের নাড়ু,নারকেল পুর ভরা দুধপুলি, পোস্ত নারিকেল বড়া, নারিকেল পার্শে, নারিকেল পোলাও, নারিকেল চিংড়ির দাম, চকলেট নারিকেল কুকি,জ নারিকেল মোচা, নারীকেল চিকেন, নারিকেল পোস্ত পনির আরও অনেক রকম ভাবে নারিকেল দিয়ে রান্না করা যায়। যা অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।

নারিকেলের শাঁসের উপকারিতা

নারিকেলের পানিতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে তার সাথে নারিকেলের শাঁসে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম মালিক নারিকেলে রয়েছে ৩৫৪ ক্যালোরি,৩৫৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম,৩৩ গ্রাম ফ্যাট,২০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম,১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,৩.৩ গ্রাম প্রোটিন, ভিটামিন সি, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-৬ ও ভিটামিন বি-১২ রয়েছে।

আরো পড়ুন:মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয়

ওজন কমাতে সাহায্য করে। মালাই খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি হওয়া শর্তেও যদি নারিকেলের মালাই কম পরিমাণে খাওয়া যায় তবে ওজন কমতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। নারিকেলের মালাই খেলে অতিরিক্ত ক্ষুধা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং পেটটা ভরে থাকে। সে কারনে বারবার ক্ষুধা লাগে না।নারকেলের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় হজম শক্তিতে সহায়তা করে।নারিকেলের শাঁস রক্তের ইনসুলিন মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

নারিকেল পুলি বানানোর রেসিপি

যেকোনো পিঠা খেতেই ভালো লাগে। প্রতিটা মানুষই পিঠা খেতে পছন্দ করে। তার মধ্যে নারিকেলের পুলি পিঠা হলে তো কথাই নেই। কারণ পুলি পিঠা স্বাদ অনেক গুণ বেশি। নারিকেল যে পিঠাতেই দেয়া হোক সেই পিঠার স্বাদ দ্বিগুন বেড়ে যায়। পিঠা বানানো অনেক সহজ। চলুন আমরা বানানোর নিয়মটা জেনে নি।
উপকরণ
আটার খামির তৈরি করার জন্য
  • ৬ কাপ চালের গুড়া
  • পরিমাণ মতো পানি
  • সামান্য লবণ
পুর তৈরির জন্য
  • ২টা নারিকেল কুড়ানো
  • ছোট ২ টাতেজপাতা
  • ৪ টা এলাচ
  • দের কাপ চিনি
  • ঘি/ তেল এক কাপ
  • ভাজার জন্য তেল পরিমাণ মতো
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে চুলায় একটি কড়াইয়ে সামান্য তেল বা ঘি নিয়ে গরম করে তার মধ্যে কুড়ানো নারিকেল, তেজপাতা, এলাচ, ও চিনি একসাথে দিয়ে নাড়তে হবে। পুর হয়ে আসলে চুলা নেমে কড়াইটা নামিয়ে রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে চুলার আজ যেন অল্প থাকে না হলে পুর পুরে লেগে যেতে পারে এবং কালো হয়ে যেতে পারে। পুর হয়ে গেলে ঠান্ডা হতে দিতে হবে। 

এরপর চুলায় একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি নিয়ে একটু লবণ দিয়ে পানি ফুটে উঠলে চালের গুড়া অল্প অল্প করে দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। আটার সিদ্ধ করার জন্য কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে কিন্তু চুলার আঁচটা অল্প করে দিতে হবে।আটা সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে ভালো করে খামির তৈরি করে নিতে হবে।
নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এবার সে খামির থেকে লিচি কেটে পুলি বানিয়ে মাঝে নারিকেল ভরে দুই মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। অনেকে পুর ভরে মুখ বন্ধ করার সময় অনেক রকম নকশা করে থাকে। এটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগে আপনারা নকশা তৈরি করতে পারেন। এভাবে সব খামির গুলো পিঠা করে নিতে হবে। 

তারপর চুলায় একটি পাত্রে তেল ঢেলে দিয়ে গরম হতে দিতে হবে। গরম হয়ে আসলে পিঠাগুলো ছেড়ে দিতে হবে এবং দুই পাশ ভালো করে ভেজে তুলে নিতে হবে। খুব লাল করে ভাজার দরকার নেই। তবে অনেকে তাদের নিজের মত করে ভেজে তুলতে পারে। আপনারা আপনাদের ভেজে নিয়ে পরিবেশন করুন।

লেখক এর মন্তব্য

নারিকেল পানি আমরা সকলেই খেতে পছন্দ করি।নারিকেল পানিতে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। তবে এ নারকেল পানি খাওয়ার ব্যাপারেও একটু সতর্ক হওয়া দরকার। নারিকেল পানি নারিকেলের শাঁস দুটোতেই অনেক উপকার রয়েছে তেমন অপকারও রয়েছে।তাই নারকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে আমাদের খাওয়া দরকার।

আরো পড়ুন:পান খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আমার এই আর্টিকেলে আমি নারকেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা পড়ে নিশ্চয়ই উপকৃত হয়েছেন। আমারও ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যাতে অন্যরাও করে জানতে পারে নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url