চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাছাড়াও গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও আলোচনা করব। আপনারা চিয়া সিড খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিবেন। এবং সঠিক খাওয়ার নিয়মটা জেনে খাবেন।
চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

এই আর্টিকেলে চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কেও আলোচনা করব। যা পড়ে আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন চিয়া সিড এর উপকারিতা কত রয়েছে। তাই আপনারা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করবেন। তাহলে জানতে পারবেন চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

ভূমিকা

চিয়া সিড পুষ্টি উপাদানে ভরা একটি খাবার। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে দুধের চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম এবং কমলার চেয়েও ভিটামিন সি দ্বিগুণ বেশি।চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ এত বেশি যে এটি নিয়ম মত খেলে আপনার শরীরের অনেক উপকারে আসবে।

ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড ওজন কমানোর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে যার কারণে ওজন কমাতে সহায়তা করে। অনেক পুষ্টিবিদ রয়েছে তাদের মতে চিয়া সিড সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে নিয়মিত খেলে খুব দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করে। এক চামচ চিয়া সিডের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পানি দিয়ে খেলে খুব ভালো উপকার পাওয়া যাবে।

চিয়া সিড শুধু যে শরবত হিসেবে খাওয়া যায় তা নয় চিয়া সিড আরো অনেকভাবে খাওয়া যায়। বাড়তি ওজন কমানোর জন্য ডায়েটের সাথে আপনারা চিয়া সিড যোগ করতে পারেন। চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে এটি খেলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে। এছাড়াও এতে রয়েছে ওমেগা- থ্রি,ফ্যাটি এসিড, যা মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। 

আরো পড়ুন:থ্যালাসেমিয়া কি কেন হয় লক্ষন ও প্রতিরোধে করনীয়

যার কারণে ওজন দ্রুত কমতে থাকে।পানিতে ছি৬ রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে লেবুর রস দিয়ে সেটি পান করুন। এটা আপনার ওজন দ্রুত কমে আসবে। আর দুধের সাথে যদি চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখেন তবে সেটিতে লেবুর রস না দিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন এতেও আপনার দ্রুত ওজন কমবে।তাছাড়াও চিয়া সিড আরো বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়।

বিভিন্ন রকম সুপের মধ্যে চিয়া সিট ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন রকম শরবত বা জুস বানাতে চিয়া সিট ব্যবহার করা হয়। ওটস এবং সালাদের সাথে চিয়া সিট ব্যবহার করা হয়। এই সবগুলোর সাথে খেতে পারেন।

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিড এক ধরনের বীজ। এই বীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ যার কারণে আমাদের ওজন কমাতে এবং হজম শক্তিতে সহায়তা করে।আসুন আমরা জেনে নি চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

আরো পড়ুন:লাউ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিড এর উপকারিতা

ওজন কমাতে চিয়া সিড একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যার ফলে চিয়া সিড খেলে পেট ভরা থাকে। ক্ষুধা কম লাগে। যার ফলে ওজন বৃদ্ধি হয় না।
  • চিয়া সিডে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, বিভিন্ন খনিজ পদার্থ যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিটে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। যার ফলে আমাদের হার শক্ত ও মজবুত রাখে।
  • অনেকেরই রয়েছে রক্তচাপের সমস্যা। বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। আপনারা চিয়া সিড খেতে পারেন এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • চিয়া সিড খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়। অনেকের হজমের সমস্যা রয়েছে। তারা সিট খেতে পারেন এতে আপনার হজম শক্তি সমস্যা দূর করবে।
  • সিয়া সিড রক্তে থাকা শর্করা কমাতে সহায়তা করে। যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং রক্তের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • চিয়া সিড শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দিয়ে গ্যাসের সমস্যা দূর করে।
  • আমাদের অনেকেরই ত্বকের অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেকের নখ ভেঙ্গে যায় ও চুল পড়ে যায়। অনেক রকম সমস্যা থাকে। চিয়া সিড পড়া চুল পড়া বন্ধ হয় এবং ত্বককে সুন্দর উজ্জ্বলও নখ ভাঙ্গা দূর করতে সহায়তা করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের জন্য চিয়া সিড অনেক উপকারী।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবেও এটি ব্যবহার করা হয়। কারণ অনেকের কোলন ক্যান্সারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে কোলন ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ অনেকের মলত্যাগের সমস্যা থাকে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব হয়।

চিয়া সিড এর অপকারিতা

প্রতিটা খাবারের যেমন উপকারিতা রয়েছে তার অপকারিতা ও রয়েছে। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছু খেলেই তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই যে কোন খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার যে অতিরিক্ত খাবেন না। নিয়মের মধ্যেই খাওয়া দরকার যেটা পরিমানে আপনার
শরীরে প্রয়োজন।সেক্ষেত্রে চিয়া সিড যদি অতিরিক্ত খাওয়া যায় তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নি চিয়া সিড খাওয়ার অপকারী দিকগুলো।
  • চিয়া সিড বেশি খাওয়ার ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে । ক্যান্সার এর মত মারাত্মক রোগ শরীরে সৃষ্টি হতে পারে। আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাধীনতা অবলম্বন করা দরকার।
  • অনেকে ডায়েট চার্টের মধ্যে চিয়া সিড রাখে। ওজন কমানোর জন্য যেহেতু চিয়া সিড অনেক উপকারী। তাই এটি মাত্র অতিরিক্ত খেলে আপনার ওজন অতিরিক্ত কমে যেতে পারে।
  • চিয়া সিড রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এর কারণে রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে খেলে পেটের ব্যথা পেট ফাঁপা হতে পারে।
  • অতিরিক্তচিয়া সিড খাওয়ার ফলে রক্তের শর্করার পরিমাণ অতিরিক্ত কমে যেতে পারে।

চিয়া সিড এর বাংলা নাম

চিয়া সিড কে বাংলা ভাষায় বলা হয় “ চিয়া বীজ” বা চিয়া তন্ত।বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর অনুমোদন নিয়ে এর নাম চিয়া বীজ।তবে বাঙালিরা চিয়া সিডকে বলে থাকে পুষ্টি বীজী বা শক্তি বীজ। এ বীজ অনেকটা দেখতে তোকমা দানার মত। তাই অনেকেই একে তোকমা হিসেবে ভেবে নাই। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল। তোকমা বীজ আলাদা আর চিয়া বীজ আলাদা।

গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।চিয়া সিড রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সংক্রমণ রোগের হ্রাস করতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত খেলে কষ্ট কাঠিন্য দূর করে ক্ষুধা কম করে।চিয়া সিড খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

সেক্ষেত্রে আপনাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। ডাক্তার চিয়া সিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন সঠিকভাবে । ডাক্তার যে পরিমাণ চিয়া সিড খেতে বলে সেভাবেই খাওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত কোন কিছু খেলে ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডিহাইড্রেশন, ডায়রিয়া সহ সরকারের মাত্রা কমে যেতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।

চিয়া সিড এর পুষ্টি উপাদান

চিয়া সিড দেখতে অনেকটা তিলের মত ছোট ছোট। সাদা কালো দুই রকম হয়ে থাকে। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার বা ইউএসডিএ এর ন্যাশনাল নিউট্রিয়েন্ট ডাটাবেজ থেকে জানা গেছে যে ১০০ গ্রাম সিয়া সিটে রয়েছে ৪৮৬ ক্যালোরি,৪২.১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,৩৪.৪ গ্রাম ফাইবার, ১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন, ৩০.৭ গ্রাম ফ্যাট ,৬% পানি,০ চিনি ও০ গ্লুটেন। 

চিনি ও গ্লুটেনকে ০ লেখা হয়েছে কারণ এতে চিনি ও গ্লুটেন নাই। এছাড়াও এতে আরো রয়েছে ক্লোরজেনিক এসিড, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, জিং,ক ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম, ক্যাফিক এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার সহ আরো বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান।
  • দুধের চেয়েও বেশি ক্যালসিয়াম যা পাঁচগুণ বেশি হয়ে থাকে।
  • পালং শাকের চেয়েও আয়রন বেশি থাকে যার পরিমাণ তিনগুণের বেশি থাকে।
  • কমলার চেয়েও অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে।
  • কলার চেয়েও ভিটামিন সি পরিমাণ বেশি থাকে।

লেখক এর মন্তব্য

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা অপরিহার্য। আমাদের শরীরের জন্য চিয়া সিড অনেক উপকারী। অনেকেই আবার গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া কথা ভেবে থাকেন। সেক্ষেত্রে আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই খেতে পারেন।চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা পড়ে আপনারা চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম মেনে খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন।

আরো পড়ুন:চিরতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন

আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন এবং অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করুন ।যেন তারাও জানতে পারে চিয়া সিড এর
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url