চিরতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন

চিরতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন সম্পর্কে এবং চিরতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা আমারে ওয়েবসাইটে বিস্তারিত করা হলো। আপনারা যেন চিরতার সম্পর্কে জানতে পারে। সেই জন্য আজকের আমার এই আর্টিকেলটি চিরতা নিয়ে লিখা হয়েছে। চিরতা অনেকেই ইচ্ছা মত খেয়ে থাকেন এটা ভুল একটা কাজ। চিরতা নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া প্রয়োজন।
চিরতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন

সে কারণে প্রিয় পাঠক আপনি আমারে আর্টিকেলটি না টেনে সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আমি চিরতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও লিখেছি এতে আপনারা জানতে পারবেন এর খাওয়ার নিয়ম। চিরতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন সম্পর্কে না জেনে চিরতা একটানা খাওয়া উচিত নয়।

ভূমিকা

আপনারা অনেকেই চিরতা সম্পর্কে জানেন। চিরতার একটি ভেষজ উদ্ভিদ। চিরতা একটি তিতা ধরনের উদ্ভিদ যার শিখর তিতা। চিরতার অনেক উপকারিতা রয়েছে। প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য চিরতা ব্যবহার করে আসছে। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রেও এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। চিরতার কতদিন খাওয়া যায় জানুন সে সম্পর্কে ভালো করে ধারণা নিয়ে এটা খাওয়া দরকার। নয়তোবা হিতের বিপরীত হতে পারে। আপনারা খাওয়ার আগে অবশ্যই কত দিন খাওয়া যায় সে নিয়মটা জানবেন এবং কিভাবে খেলে কোন অসুখ সেরে যাবে সে নিয়ম জেনে খাবেন।

খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা

চিরতা এক ধরনের ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর স্বাদ একেবারে তিতা ধরনের।বহকাল থেকেই চিরতা বিভিন্ন রকম রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত অনেকেই চিরতা উদ্ভিদ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে চিরতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জেনে নি।

আরো পড়ুন:আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম

কৃমি দূর করতে: অনেক সময় দেখা যায় ছোটরা কৃমি রোগে ভোগে, আবার অনেক ক্ষেত্রে বড়রাও কৃমি রোগে ভোগে। সেক্ষেত্রে চিরতা ভেজানো পানি অনেক উপকারী।চিরতা ভেজানো পানি পান করলে কৃমির উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
চুলকানি দূর করতে: অনেকেরই চুলকানি রোগ থাকে। চুলকানি অনেক সমস্যা জড়িত একটি রোগ। এই চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ২০ গ্রাম চিরতাকে সামান্য পরিমাণ পানি ছিটে নিতে হবে। তারপর লোহার তাওয়া ১০০ গ্রাম সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে চিরতা দিয়ে ভালোভাবে ভাজতে হবে।তারপর এই তেলটি যে জায়গায় চুলকাচ্ছে সেই জায়গাগুলোতে অল্প অল্প করে মেসেজ করে দিতে হবে।তাহলে চুলকানি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
চুল পড়া রোধ করতে : অনেক সময় আমাদের চুল ঝরে যায়। এই চুল ঝরা রোধ করতে চিরতার পাতা সাহায্য করতে পারে। এক কাপ গরম পানিতে ৫ গ্রাম চিরতাও ভিজিয়ে রেখে পরদিন ছেঁকে তা চুলে ভালো করে ধুয়ে নিলেই চুল পড়া সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে।
ত্বক ভালো রাখতে:ত্বক ভালো রাখতে চিরতাপাতা অনেক সাহায্য করে। নিয়মিত চিরতাপাতা খেলে বয়সের ছাপ দূর হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভোগে ।এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চিরতা ভেজানো পানি অনেক সহায়তা করে। এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সকালে খালি পেটে চিরতা ভেজানো পানি খেতে হবে।
রক্ত পরিষ্কার রাখতে: নিয়মিত চিরতা ভেজানো পানি খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে। শরীরের রক্তের সাথে বিভিন্ন রকম খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর হয় সুতরাং আপনি আপনার শরীরের রক্ত ভালো রাখতে নিয়মিত চিরতা ভিজানো পানি খেতে পারেন তাতে আপনি অনেক উপকার পাবেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে: এখন অনেকেই ডায়াবেটিস রোগে ভোগে থাকেন। তাহলে অবশ্যই খালি পেটে নিয়মিত চিরতরে যেন পানি পান করেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। আপনার ডায়াবেটিস অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে না।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:নিয়মিত চিরতা ভেজানো পানি পান করলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। খালি পেটে চিরতা ভিজানো পানি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তাই আপনারা এভাবে খেতে পারেন।
লিভার ভালো রাখতে: লিভার ভালো রাখতে চিরতা পাতার পানি পান করলে অনেক উপকারে আসে। লিভারের কোনরকম ক্ষতি হতে দেয় না। লিভারের টক্সিন দূর করতে চিরতা অনেক উপকারী ভেষজ উদ্ভিদ হিসাবে কাজ করে। এছাড়া লিভারে নানারকম সমস্যা থাকে সেগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
বমি ভাব দূর করে: অনেকের বমি বমি ভাব হয়ে থাকে। চিরতার পাতা ভিজিয়ে রেখে পান করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ক্ষুধা বৃদ্ধিতে: যাদের ক্ষুধা কম লাগে অরুচি ভাব বেশি তাদের জন্য চিরতার পানি অনেক ভালো উপকারে আসে। তারা সকালে খালি পেটে চিরতার পানি পান করলে ক্ষুধা বৃদ্ধি হবে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে:ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে চিরতা পাতা ব্যবহার করা যায়। অ্যামরোজেন্টিন যৌগ চিরতা পাতায় রয়েছে এই কারণেই ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত সাদাস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে: যাদের অতিরিক্ত সাদাস্রাব যায় তারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে চিরতা পাতা ভেজানো পানি পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে চিরতার পাতা এবং এর শিকড় দুটোই ভালো কাজে দেয়।
জ্বর, সর্দি, কাশি নিরাময়: চির তাতে বিদ্যমান অ্যান্টিভাইরাল এর কারনে জ্বর, সর্দি,-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চিরতার পাতার পানি পান করলে এবং চিরতার শিকড় খেলে জ্বর, সর্দি,কাশি থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে: যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তারা এক গ্লাস গরম পানিতে ৫-৬ গ্রাম চিরতার পাতা ভিজিয়ে রেখে পরের দিন ২-৩ বার খেলে অনেক উপকারে আসে। সেই সাথে যেসব খাবারের এলার্জি রয়েছে সেই খাবার থেকে আবার এলার্জি হতে পারে সে কারণে সে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আরো পড়ুন:থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

চিরতা খাওয়ার অপকারিতা

চিরতা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে আবার এই চিরতা খাওয়ারই অনেক অপকারিতাও রয়েছে। আমরা ঠিকমত নিয়ম মাফিক চিরতা খাব। চিরতা পাতা খাওয়ার কিছু অপকারিতা রয়েছে।
স্তন্যদায়ী মা এবং গর্ভবতী ক্ষেত্রে চিরতা ব্যবহার করা যাবে না। যদি তারা চিরতা খেতে চান তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
  • চিরতা অনেকটাই তিতা স্বাদের। তাই অনেকেই এটা খাওয়ার সাথে সাথে বমি করে ফেলে। খাওয়ার পরে বমি ভাব হয়ে থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
  • একইভাবে চিরতার পাতা পান করলে অনেক ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।চিরতার পাতা কিডনির জন্য ভালো আবার অতিরিক্ত মাত্রায় কোন কিছুই খাওয়া ভালো না। চিরতাতে অ্যালকালয়েট নামক উপাদান থাকার কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অতিরিক্ত চিরতা খেলে পানি শুন্যতাও দেখা যায় যাকেডনির জন্য ক্ষতিকর। তাই চিরতা অতিরিক্ত ব্যবহার না করে নিয়মমাফিক ব্যবহার করা উচিত।

চিরতা খাওয়ার নিয়ম

  • রাতে একগ্লাস বা সমপরিমাণ পানিতে ৫-৭ গ্রাম চিরতা ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে এ পানিটি ছেঁকে খেতে হবে।
  • চিরতার পাতার রস বের করে তাতে মধু যোগ করে খেতে পারেন।
  • জ্বর নিরাময়ে ৭-৮ কাপ গরম পানিতে চিরতার সিদ্ধ করে সেটা ২-৩ কাপ করে সকালে বিকালে খেলে অনেক উপকারে আসে।
  • কাটা ঘা বা ক্ষত স্থানে চিরতর পানি দিয়ে মুছে দিলে অনেক উপকারে আসে। ঘুমানোর আগে এক কাপ গরম পানিতে চিরতা ভিজিয়ে রাখলে সেই পানি দিয়ে ক্ষতস্থান ধুতে হবে।
  • ১-২ গ্রাম চিরতার গুঁড়ার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কাশি দূর হয়।

চিরতা কতদিন খাওয়া যায়

চিরতার পাতা একটানা এক মাস বা তার চেয়েও বেশি খাওয়া ঠিক নয়। এক্ষেত্রে হিতের বিপরীত হতে পারে।চিরতা ১০-১৫ এর বেশি খাওয়া উচিত নয়। খেলে এর উপকারীর চাইতে অপকারিতা হতে পারে।
চিরতা কোথায় পাওয়া যায়

আরো পড়ুন:কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম

চিরতা সব দোকানেই পাওয়া যায় না। তবে চিরতা খোঁজা সমস্যার কিছু না। কারণ যেসব দোকানে তোকমা ইসুবগুলের ভুষি আয়ুর্বেদিক ঔষধ পাওয়া যায় সেগুলোতেই চিরতাও পাওয়া যায়। তাই আপনারা সে দোকানগুলো খোঁজ করবেন তাহলে খুব সহজে পেয়ে যাবেন।

লেখকের মন্তব্য

উপরের আলোচনা থেকে আপনারা চিরতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন সম্পর্কে জেনেছেন । আমরা অনেক সময় অনেক রকম অসুস্থ তাই পড়ি। স্বাভাবিক জীবন যেন সুস্থতায় কাটে সেজন্য আমরা চিরতা পাতা কতদিন খাওয়া যায় জানুন সে সম্পর্কে জেনে খেতে পারি। কিন্তু খুব বেশি অসুস্থ হয়ে গেলে চিরতা পাতা না খেয়ে অবশ্যই আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

আরো পড়ুন:হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ কি কি

আশা করি আমার ভালো লেগেছে এবং আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আমারে আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন এবং আমার আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়বেন এবং এ আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মন্তব্য কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url