মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানুন
মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানুন এবং আশুরা কি সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানুন। আমার এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এছাড়াও এখানে মহরম মাসের কার্যকলাপ সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এই বিষয়ে আরো জানতে চান তাহলে আমারে আর্টিকেলটি করুন।
প্রিয় পাঠক আপনি এই আর্টিকেলে মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারবেন।আশুরার দিনে যে কাজগুলো করা মানা আছে সেগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। মহরম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয় এবং এই মাসে ফজিলত তাৎপর্য অত্যাধিক।
ভূমিকা
মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানুন আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে। আপনারা শুধু জানেন যে কারবালার ঘটনা থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু মহরম মাসে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে এ মাসের ফজিলত অনেক বেশি। মহরম মাস হিজরী সনের প্রথম মাস। মহরম মাসে যেমন পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে মহরম মাসে কেয়ামত সৃষ্টি হবে। আমাদের মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জেনে কাজ করা উচিত কারণ কোন রকম শিরেকি করা উচিত হবে না।
মহরম কি
মহরম হচ্ছে আরবি হিজরির সনের প্রথম মাস। বাংলা এবং ইংরেজি খ্রিস্টাব্দ অনুযায়ী যেমন ১২ মাসের প্রথম মাস রয়েছে তেমন আরবি মাসের এটা প্রথম মাস। শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে মহরম মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। এ মাসের মর্যাদা অনেক বেশি। হিজরীর চারটি সম্মানিত মাসের মধ্যে মহরম মাস অন্যতম। শরীয়তে এ মাসে কোন যুদ্ধ লড়াই সবকিছু নিষেধ করতে বলা হয়েছে। এ মাসে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে যার কারণে যুদ্ধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমন একটা দিন যেটার ফজিলত ও বরকত অত্যন্ত বেশি।
মহরম মাসের ফজিলত
মহরম শব্দের অর্থ হচ্ছে মর্যাদাপূর্ণ। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ঐতিহাসিক দিক দিয়ে এই মাসের মর্যাদা অত্যন্ত বেশি তাই এই মাসের নাম করা হয় মহরম অর্থাৎ মর্যাদাপূর্ণ মাস। আরবি হিজরীর এমন চারটি মাস রয়েছে মধ্যে মহরম মাস একটি। আরবি হিজরীর ১২ মাসের মধ্যে যে চারটি মাস বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে তার মধ্যে তিনটি মাস ধারাবাহিক ভাবে রয়েছে অর্থাৎ জিলক্বদ, জিলহজ্ব ও মহররম এবং শেষ মাসটি হচ্ছে রজব মাস ।মহরম মাসের ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে কাটানো উচিত। কারো সাথে মারামারি ঝগড়া-বিবাদ না করে শান্তশিষ্ট ভাবে চলাফেরা করা। মহরম মাসের ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা আল কুরআনে বলেন যে তোমরা এ মাসগুলোর সম্মান বিনষ্ট করে নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না ।(সুরা তওবা: ৩৬)
আশুরা কি
আশুরা বলা হয় মহরম মাসের ১০ তারিখে। এ মাসের মর্যাদা অনেক বেশি হওয়ার কারণ অনেকগুলো ঐতিহাসিক ঘটনা সাক্ষী হয়ে আছে। শুধু উম্মতের মোহাম্মদী নয় বড় অনেক নবীদের আবির্ভাব এর সূত্রপাত ঘটে এই মহরম মাসে।আশুরার দিনের মধ্যে রয়েছে রোজা রাখা যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর রোজা শুরু হয় অনেক আগে থেকেই।
আরো পড়ুন:কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়
ইহুদীরা আশুরার দিনে রোজা রাখতে শুরু করে। এর কারণ হিসেবে জানার জন্য যখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তখন বলা হয়েছিল যে মুসা (আ.) ও তার সম্প্রদায়ের বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের হাত থেকে আল্লাহ মুক্তি করেছিলেন। সে কারণে এই দিনে মুসা (আঃ) রোজা রেখেছিলেন ।তাই ইহুদীরাও রোজা রাখতো। যখন রাসূল (সা.) এটি শুনলেন তখন তিনি বললেন যে এক্ষেত্রে হকদার আমি বেশি। তারপর থেকে তিনি নিজে এবং সাহাবীদের রোজা রাখার জন্য বললেন।
তবে পার্থক্য রয়েছে একটাই যে ইহুদিরা আশুরা উপলক্ষে একটি মাত্র রোজা রাখে কিন্তু মুসলমানরা দুইটি রোজা রাখে কারণ ইহুদিদের সাথে যেন না মিলে যায় সেই দিকে খেয়াল রেখে রোজা রাখে। তাই আশুরা রোজার ক্ষেত্রে ৯ অথবা ১১ তারিখে দুইটি রোজা পালন করা দরকার।রমজান মাসের ৩০ টি রোজায় যত ফজিলত রয়েছে তারপরেই আশুরা রোজার ফজিলত রয়েছে।
মহরমের রোজা কত তারিখে ২০২৪
মহরমের মাসের ১০ তারিখে আসরের মাস হিসেবে ধরা হয়।মুসলমানদের দুই ধরনের সম্প্রদায় রয়েছে। একটি হচ্ছে সুন্নি সম্প্রদায় ওআপরটি হলো শিয়া সম্প্রদায়।শিয়া মুসলমানেরা এই দিনে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে থাকে। একে বলা হয় কামাজানি। অপরদিকে সুন্নি মুসলমানেরা এই দিনে রোজা রাখে এবং ইয়া হোসেন অথবা ইয়া আলী উচ্চারণ করে।
তাছাড়াও এই দিনে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম ভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আবার অনেক জায়গাতে দুঃখ প্রকাশ করার জন্য অনেক মুসলিম সম্প্রদায় একসাথে হয়ে এই দিনটি পালন করে। দুটি পালন করার জন্য অনেক জায়গায় অনেক মতভেদ রয়েছে। অনেক এলাকাতে মহরম খেলা হয় লাঠি খেলা বিভিন্ন রকম খেলার মাধ্যমে পালন করা হয়।
আবার ঢোল বাজনা বাজানো হয়।১৪৪ বছর আগে রাসুল (সা.) এবং সাহাবীগণ মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা। ঐদিন ছিল প্রথম দিন যেটা মহরম মাসের। আশুরার দিন মহরম মাসের ১০ তারিখে বলা হয় এই দিনে ইমাম হোসেন মৃত্যুর শোক পালন করা হয় কারণ কারবালার যুদ্ধে তিনি প্রাণ ত্যাগ করে শহীদ হন। পবিত্র মহরম ২০২৪ সালের পালন করা হবে ১৭ জুলাই২০২৪ বুধবার।
আরো পড়ুন:ওমরার ফরজ কয়টি ও কি কি
সকলে আপনারা কোন শিরেক না করে সঠিক ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে দিনটি পালন করবেন। ১৭ জুলাই ২০২৪ সালের আশুরা পালন করা হবে। মহররমের রোজা দুইটি করতে হয় তাই ১৬ জুলাই ও ১৭ জুলাই রোজা করতে পারেন অথবা ১৭ জুলাই ও ১৮ জুলাই রোজা করতে পারেন।
তবে মহরম বা আশুরা এটি পবিত্র মহরম মাসের চাঁদ দেখার উপরেই নির্ভর করে।প্রতিটা মুসলিমদের ঘরে এই দিনটা সুখ ও ত্যাগের হিসেবে পালন করা হয় বাংলাদেশও কোন অংশে পিছিয়ে নাই। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন স্থান থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের মিছিল বের করা হয়।
মহরম এর ইতিহাস
মহরম মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ আশুরার দিনে হোসাইন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তে সংগ্রাম করে শাহাদত বরণ করেন। মুসলমানদের জন্য এই দিনটি বিভিন্ন কারণে মর্যাদা পূর্ণ একটি মাস। মহরম মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ আশুরার দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করা হয় ও যুগান্তকারী ঘটনা এই মাসেই সংঘটিত হয়।
- পাহাড় পর্বত আকাশ সবকিছুই আশুরার দিনে সৃষ্টি করা হয়।
- আদম (আ.) এর সৃষ্টি হয় এই দিনেই।
- এই দিনে হযরত আইয়ুব (আ.) দীর্ঘ ১৮ বছর পর রোগ থেকে মুক্তি পান।
- হযরত ইউনুস (আ.) কে মাছের পেট থেকে উদ্ধার করা হয় ৪০ দিন পর ।
- হযরত দাউদ (আ.) কে সম্মানের সম্মানিত করা হয়।
- হযরত ঈসা(আ.) এই দিনে আগমন করা হয়েছে পৃথিবীতে আবার এই দিনেই আসমানে উত্তোলন করা হয়েছে।
- হযরত ইদ্রিস (আ.) কে আসমানে জীবিত উত্তোলন করা হয়েছে এই দিনে।
- খায়বার যুদ্ধ শুরু হয় তখন এই দিনেই এই যুদ্ধে বিজয় অর্জন করা হয়।
- এই দিনে আদম (আ.) জান্নাত থেকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয় এবং হাওয়া (আ.) এর সাথে সাক্ষাৎ করা হয়।
- হযরত নূহ (আ.) প্লাবন ও তুফান থেকে পরিত্রাণ পান।
- হযরত ইব্রাহিম(আ.) নমরুদের অগ্নিকাণ্ড থেকে মুক্তি পায়।
- হযরত সুলাইমান (আ.) বাদশাহী ফিরে দেয়া হয়।
- হযরত ইয়াকুব (আ.) এর হারানো পুত্র সাথে দেখা করানো হয়।
- হযরত ইয়াকুব (আ.) এর পুত্র হযরত ইউসুফ(আ.)।
- হযরত মুহাম্মদ(সা.) মক্কা শরীফ থেকে হিজরত শেষ করে মদিনায় যায়।
- হযরত ইমাম হোসাইন(রা.) এবং তার স্বৈরশাসক ইয়াজিদ সৈন্যদের কাছ থেকে কারবালা প্রান্তে শাহাদাত বরণ করে।
আশুরার বর্জনীয় বিষয় কি কি
আশুরার দিন অনেকেই ভালো রান্না করে এবং নতুন কাপড়চোপড় পড়ে ঘুরে বেড়ায়। মেলা বসে বিভিন্ন জায়গায়। মেলাতে অনেকেই ঘুরতে যায় এবং সেরে মাল ও খাবার বিক্রি হয়। আশুরার দিনে বুকে চাপড়ানো পিঠে চাবুক দিয়ে আঘাত করা রক্তাক্ত করা শোক পালন করা শোক মিছিল করা ইত্যাদি শরীয়ত সম্মত না।ঢোল বাজনা এবং অনেক রকম খেলা দেখানো এগুলো শরীয়ত সম্মত নয়। আপনারা যারা এই দিন সম্পর্কে জানতেন না তারা ভালভাবে পড়ে বুঝতে হবে যে এই দিনে কি ঘটনা ঘটেছিল এবং আপনাদের কি করা উচিত। আশুরার দিনে অনেক ঘটনা ঘটেছে। অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা মধ্যেই মুসলমানদের অনেক শিক্ষানীয় বিষয় রয়েছে।
লেখকের মন্তব্য
মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটা মনোযোগ সহকারে উনারা করলে মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং আশুরার কি সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশুরা যে শুধু হযরত হুসাইন(আ.) এর কারবালা ময়দানের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যে পালন করা হয় তা নয়। মহরম মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানুন এবং বুঝুন যে ঘটনা নয় আরো অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে।
প্রিয় পাঠক আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এবং আপনি আমার ওয়েবসাইটটা ভিজিট করতে পারেন আরো নতুন নতুন আর্টিকেল করার জন্য ধন্যবাদ।
সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;
comment url