হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ কি কি
হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ কি কি ও হিট স্ট্রোক এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চান?তাহলে আমার এই পোস্টটি আপনি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন তাহলে স্ট্রোক এর লক্ষণ কি কি ও এর প্রতিকার এবং স্ট্রোক সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
হিট স্ট্রোক এর কারণে প্রতিবছর মানুষ প্যারালাইসিস হচ্ছে এমনকি মারাও যাচ্ছে। তাই আমাদের হিট স্ট্রোক সম্পর্কে ভালোভাবে জানা দরকার। এবংহিট স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো কি কি হতে পারে সেই দিকে খেয়াল রেখে যদি আমরা স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করি এবং বাইরের খাবার না খেয়ে হেলদি ফুড খায় তাহলে আমরা হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে পারি।
ভূমিকা
হিট স্ট্রোক ছোট-বড় সবারই হতে পারে। এবং কিছু ওষুধ আছে যেগুলো আর প্রতিক্রিয়ার ফলে হিট স্ট্রোক হয়।হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ কি কি এগুলো আমাদের জানা থাকলে হিট স্ট্রোক রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারা যায়।হিট স্ট্রোক এর প্রতিকার গুলো মেনে আমাদের চলতে হবে। অতিরিক্ত গরমে একভাবে সারাদিন কাজ করা যাবে না। একটু পর পর পানি খেতে হবে এবং ঠান্ডা জায়গায় কিছুক্ষণ অবস্থান করতে হবে। শিশুদের ঘন ঘন তরল খাবার দিতে হবে। কোন মানুষেরহিট স্ট্রোক এর লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
হিট স্ট্রোক কি
শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয় এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা শরীর থেকে বের করে ছড়াতে পারে না তখন হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস C ( ১০৪ডিগ্রি ফারেনহাইট F) এর বেশি হয় এবং সাথে শরীরে লাল দাগ মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।হিট স্ট্রোক দুই ধরনের একটি সাধারনত পরিশ্রমই হিট স্ট্রোক আর একটি ক্লাসিক হিট স্ট্রোক।
আরো পড়ুন:ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম জানুন
ক্লাসিক হিট স্ট্রোক ঘাম হয় না কিন্তু পরিশ্রমই হিট স্ট্রোক ঘাম বের হতে শুরু হয়। হিট স্ট্রোক কে সান স্ট্রোক বলা হয়।উচ্চ তাপমাত্রা বা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে হিট স্ট্রোক হয়ে থাকে। তাপমাত্রা মাত্রায় বেড়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে শিশুরা বা বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হয়।
হিট স্ট্রোরের ঝুঁকি কাদের হয়
আসুন আমরা জেনে নি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কাদের বেশি হয়ে থাকে।
- শিশু
- বয়স্ক
- যাদের ওজন বেশি
- গর্ভবতী
- যে ওষুধগুলো সেবন করলে হিট স্ট্রোক বাড়ে সে ওষুধ সেবনকারী
- কিছু রোগ আছে তা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি
হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ
অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষ বিভিন্ন রকম অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে ।অতিরিক্ত গরমের কারণে হিট স্ট্রোক বেশি হচ্ছে। এটি একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা যার কারণে মানুষ মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ে। এমনকি স্টকে চলে যায় প্যারালাইসিস হতে পারে। এ রোগে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই হিট স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো জানতে হবে। আসুন আমরা জেনে নি হিট স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো।
- শরীরের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে১০৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট হয়।
- বমি বমি ভাব হওয়া। মাথা ব্যথা ও হাইপার ভেন্টিলেশন এর কারণে বমি বমি ভাব হতে পারে।
- হিট স্ট্রোক এর আগে বিরক্ত বোধ করা রাগারাগি করা অতিরিক্ত কথা বলা অতিরিক্ত বকবক করতে পারে।
- দ্রুত হৃদস্পন্দন হতে পারে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
- প্রচন্ড মাথা ব্যথা হতে পারে এটি একটি হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।
- কথা জড়িয়ে যেতে পারে। কথা বলতে বলতে অনেক সময় কথা জড়িয়ে যায়।
- অতিরিক্ত গরমেও ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায়।
- রোগী হিট স্ট্রোক চলে যায় আবার অজ্ঞান হতে পারে। অজ্ঞান হওয়ার আগে রোগের মাথা ঘুরা বা হালকা অনুভব হবে এরকম কিছু দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত গরমের কারণে হিট স্ট্রোকের রোগীর প্রসাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
- ত্বকে লালচে দাগ দেখা দেয়।
- নিঃশ্বাস দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। নাড়ির স্পন্দন দ্রুত হয়।
- কারো কারো আবার খিচুনি শুরু হতে পারে।
হিট স্ট্রোক এর প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কোন মানুষের হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো দেখা দেয় তবে যারা রোগীর আশে পাশে থাকবে তারা প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা করতে পারে সেগুলো আসুন আমরা জেনেনি।
- প্রথমে রোগীকে তাড়াতাড়ি ঠান্ডা শীতল স্থলে নিয়ে যেতে হবে। ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিয়ে ঠান্ডা করতে হবে।
- রোগীর কাপড় কিছুটা খুলে দিয়ে গোসল করালে ভালো হয়। তাতে শরীরের গরমটা কমতে থাকে।
- গোসল করিয়ে বাতাস দিলে শরীরে তাপমাত্রা আস্তে আস্তে কমবে।
- বগলে, কাঁধে ও কুচকিতে বরফ দিলে ভালো হয়।
- রোগীকে স্যালাইন ও পানি দিন। কোন গরম খাবার দেয়া যাবে না।
- শরীর ঘন ঘন ভেজা কাপড় দিয়ে মুছতে থাকতে হবে।
- দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
হিট স্ট্রোক এর কারণ
অতিরিক্ত গরমের কারণে আমি বা আপনি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারি।তাই আমাদের অবশ্যই জানতে হবে হিট স্ট্রোক এর প্রতিকার, কারণ ও লক্ষণ তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা নিজেকে বাঁচাতে পারবো। তাই আসুন আমরা জেনে নি এর কারণগুলো।
- অতিরিক্ত বড়সড়ও মোটা কাপড়ের এবং টাইট জামা পরার কারণে ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না।
- যারা অ্যালকোহল পান করে তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমে যায়।
- অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানি কম হয়ে যায় এতে পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে পানি শূন্যতা দেখা দেয়।
- কিছু ওষধ আছে যেগুলোর প্রতিক্রিয়ার কারণেই হিট স্ট্রোক হতে পারে।
- যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের অতিরিক্ত গরমস্থানে থাকার কারণে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
হিট স্ট্রোক এর প্রতিকার
- হেলদি ও তরল জাতীয় খাবার ডায়েটে রাখুন। আপনারা অনেকেই ঘরের বাইরে রোদে কাজ করেন বা অনেকেই আছে ব্যায়াম করেন।তাদের হিট স্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।ভাজাপোড়া মসলাদার খাবার থেকে বিরত থাকুন। এগুলো না খেয়ে ডাবের পানি ফ্রেশ জুস ঠান্ডা শরবত ইত্যাদি শরবত ঠান্ডা পানিও খেতে পারেন। খাবার হিসেবে হেলদি কিছু ফুড খেতে পারেন যা হজমে সাহায্য করে।
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সুগার ড্রিংগুলো বা যেগুলো অ্যালকোহল জাতীয় সেগুলোতে পানি শূন্যতা সৃষ্টি করে। এতে লবণের ঘাটতি কমে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে নিরাপদ নাও হতে পারে। যদি রোগী অজ্ঞান হয়ে থাকে তবে মুখে ফেলা খাওয়া স্যালাইন বাদ দিয়ে শিরায় স্যালাইন পুশ করতে হবে।
- সব বয়সী মানুষের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে হিট স্ট্রোকের মত রোগে আক্রান্ত না হয়। শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে তাই শিশুদের অতিরিক্ত পানি ও তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে। অতিরিক্ত না ঘামে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুরা অতীতে তাড়াতাড়ি ঘেমে যায় কারণ তারা দৌড়াদৌড়ি করতে ভালোবাসে। তাই তাদের ঘন ঘন তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে।
- যেসব বয়স্ক মানুষের ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে মিষ্টি কোন জুস দেয়া যাবে না। তাদেরকে ডাবের পানি দিতে হবে।
- ঢিলা ঢালা হালকা কাপড় পড়তে হবে যাতে গরম কম লাগে এবং ঘামলে সেটা বাষ্পীভূত হতে পারে।
- রোদে বাইরে যাওয়ার সময় টুপি ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। কারণ যত গরমই হোক আমাদের বাইরে যেয়ে কাজ করতে হয়।
- রোদে যখন অনেক সময় ধরে কাজ করতে হয় তখন কিছুক্ষণ পরে পরে আমাদের পানি,স্যালাইন বা জুস খেতে হবে।
- আবার গরম থেকে গিয়ে ঠান্ডা পানি আইসক্রিম বা ঠান্ডা জাতীয় খাবার খেলে অনেক সময় গলা ব্যথা সর্দি কাশি হতে পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে এবং সচেতনার সাথে খাবার খেতে হবে।
হিট স্ট্রোক কখন ও কেন হয়
যখন শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি হতে থাকে। ঘ বের হতে পারে না শরীর থেকে ঘাম বের হতে পারে না এবং শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না তখন ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা১০৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর বেশি হতে পারে। তখন মানুষের হিট স্ট্রোক হয়।
আরো পড়ুন:বিশ্বের সেরা ১০ সুপার ফুডের তালিকা
সেই সময় শরীরের শরীর তার তাপমাত্রা হারাতে ব্যর্থ হয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সে কারণেই হিট স্ট্রোক হয়।কিছু ঔষধ আছে যেগুলো আর কারণেও হিট স্ট্রোক হয়। অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে হিট স্ট্রোক হতে পারে। অ্যালকোহল এর কারণে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তখন হিট স্ট্রোক হয়।
লেখকের মন্তব্য
হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো পড়ে আমরা অবশ্যই এর প্রতিকার করবো। নিয়মিত ব্যায়াম এবং পরিমাণ মতো পানি খাওয়া স্যালাইন ও ডাবের পানি পান করে আমরা হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে পারি। অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে তার মধ্যে হিট স্ট্রোক বেশি হচ্ছে। হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ গুলো বুঝে আমরা চিকিৎসা দিতে পারি।
আরো পড়ুন:আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারা উপকৃত হয়েছে। আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন যেন তারাও উপকৃত হয়। এবং আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;
comment url