ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম জানুন

ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম জানুন আমার এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনাকে কি জানেন ডিটক্স ওয়াটার কিভাবে বানাতে হয়? ডিটক্স ওয়াটার উপকারিতা অপকারিতা এবং কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে সবকিছুই আমার এই পোস্টে আপনারা পড়লে জানতে পারবেন। ডিটক্স ওয়াটার খাওয়ার নিয়ম মেনে খেতে হবে।

আপনারা যারা অতিরিক্ত মাত্রায় ডিটক্স ওয়াটার খান সেটাও কিন্তু ভালো না কারণ শরীরের নানাবিদ ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই খেয়াল রাখতে হবে আপনাদের যেন অতিমাত্রায় কোন কিছু না হয়। আমাদের শরীরের নানাবিধ ভেজাল খাদ্য অভ্যাসের জন্য বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে। ডিটক্স পানি বিভিন্ন রকম রোগ থেকে আমাদের মুক্তি দেয়।

ভূমিকা

ডিটক্স ওয়াটার বানাতে আমাদের তেমন বেশি খরচ হয় না। সহজেই পানিওটি বানানো যায়। ডিটক্স ওয়াটার খেলে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বার্ন হয় এবং শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়। আমাদের শরীরের জন্য যে পদার্থ গুলো খারাপ সেগুলো প্রসাবের দ্বারা বের হয়ে যায়। ত্বকের ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। গ্যাস্টিক ও আলসারেও অনেক উপকারে আসে। তবে আপনারা খেয়াল রাখবেন যেন অতিমাত্রায় না খাওয়া হয়। এবং ফ্রেশ ডিটক্স ওয়াটারটা খাবেন। যে উপাদান গুলো দিয়ে বানানো হয়েছে পুনরায় ওই উপাদান গুলো দিয়ে আবার পরে বানাবেন না। এতে কোন কাজে আসবেনা।

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ডিটক্স ওয়াটার

অনেকের ত্বকে মরা চামড়া জমে ত্বক নষ্ট হয়ে যায় ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। ত্বক পরিষ্কার না থাকলে ব্রণের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণ হলে অনেক কালো কালো দাগ হয় যা ত্বকের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে।ত্বককে দাগ মুক্ত ও সুন্দর করার জন্য বিভিন্ন রকম ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করতে পারি। এর মধ্যে ডিটক্স ওয়াটার একটি মাধ্যম হতে পারে। 

ডিটক্স করে ত্বকে পরিষ্কার রাখতে পারি ।প্রচুর পানি খেতে হবে বিভিন্ন রকম সবজি ফল ভিটামিন জাতীয় খাবার খেতে হবে যাতে ত্বক পরিষ্কার রাখে।মসলাযুক্ত খাবার ফাস্টফুড টাইপের খাবার জাঙ্ক ফুড পরিহার করতে হবে।দূষণমুক্ত করতে প্রতিদিনই আমাদের ডিটক্স ওয়াটার খাওয়া দরকার। প্রতিদিন আমাদের খাবার আগে ডিটক্স ওয়াটারটা খেলে খুবই ভালো একটি উপকার দেয় সারাদিনে অন্তত এক থেকে দুইবার ডিটক্স ওয়াটার খাওয়া ভালো।

ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম

অতিরিক্ত গরমের কারণে আমাদের অস্বস্তির কারণ হয়ে পড়ে ।এই গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিও আমাদের স্বস্তি দেয়। ডিহাইড্রেশন যেন না হয় সেজন্য আমরা পানি সরবত পান করে থাকি। অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকার জন্য আমাদের বিভিন্ন রকম শরবত খাওয়া উচিত। এই শরবতের মধ্যে ডিটক্স ওয়াটার
নামে একটি পানীয় রয়েছে যেটা অনেক উপকারী।

তবে অনেকেই আপনারা জানেন না যে ডিটক্স ওয়াটার কি?সেটা কিভাবে বানাতে হয় কিভাবে পান করতে হয় এই সম্পর্কে আপনারা জানেন না। ডিটক্সওয়াটার বানানোর নিয়ম সম্পর্কে আমার এই পোস্টটিতে আপনারা জানতে পারবেন। আমাদের সারাদিনের যে অনেক রকম ভাজাপোড়া তেল মসলা জাতীয় খাদ্য গ্রহণের কারণে অনেক রকম শারীরিক বা পেটের সমস্যা হয়।

অনেক সময় ক্ষুধা কমে যায় পেট ফুলে যায় ইত্যাদি কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ি।ওজন বেড়ে যায় মুখে দুর্গন্ধ বের হয় চেহারা নষ্ট হয়ে যায় ইত্যাদি কারণে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ি। এসব কিছুর সমাধানে ডিটক্স ওয়াটার পান করলে উপকার পাওয়া যায়।ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম হচ্ছে শসা লেবু পানি তুলসী পাতা একসাথে মিক্স করতে হবে।ডিটক্স ওয়াটার বানানো হয় ফল সবজি ভেষজ থেকে।

সবকিছু পাতলা করে কেটে পানির সাথে মিশিয়ে এক থেকে বারো ঘণ্টা পর্যন্ত রেখে দিলেই এই পানিকে বলা হয় ডিটক্স ওয়াটার। শসা গোল গোল করে কেটে একটা পাতি লেবু কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে তার মধ্যে তুলসী পাতা দিতে হবে। জারের মধ্যে পানিতে এসব উপকরণ ভিজিয়ে রাখতে হবে এক থেকে বারো ঘন্টা পর্যন্ত। এ পানিতে আপনারা চাইলে 

আরো পড়ুন:আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম

বিভিন্ন রকম ফল কেটে মিক্সড করতে পারেন। দারুচিনিও মিসড করতে পারেন। উপকরণগুলো ঠান্ডা পানিতে মিশাবেন এটা তৈরি হতে তিন থেকে চার ঘন্টা সময় লাগবে। পরের দিন আবার নতুন করে উপকরণগুলো নিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে মিশিয়ে ডিটক্সপানি তৈরি করবেন আগের দিনের উপকরণগুলো ব্যবহার করবেন না। এতে কোন উপকার আসবে না।

১২ ঘন্টার উপরে না রাখাই ভালো। কারণ এতে ভেজানো যে উপকরণগুলো আছে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। উপকরণ গুলো নষ্ট হয়ে গেলে পানিওটি নষ্ট হয়ে যাবে যা পান করার উপযোগী থাকবে না।তাই ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম টা ঘড়ি ঘন্টা দেখেই বানানো ভালো যাতে পানিটা নষ্ট না হয় সে টাইমের মধ্যে পান করা হয়।

ডিটক্স ওয়াটার খাওয়ার নিয়ম

ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম অনুযায়ী বানিয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা পানিতে লেবু ও শশা কুচি করে কেটে তার ভিতরে পুদিনা পাতা মিশিয়ে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা রেখে দিলে ডিটক্স ওয়াটার বানানো প্রস্তুত হয়ে যায়। এর মধ্যে দারুচিনিও দেয়া যেতে পারে এবং বিভিন্ন রকম ফল আপেল বা কমলা দিতে পারেন। প্রতিদিন রাতে মিশ্র করে রেখে দিয়ে সকালে উঠে সারাদিন সেটি পান করুন। 

আরো পড়ুন:চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধের নাম

পরের দিন আবার তৈরি করবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে ডিটক্স ওয়াটার পান করবেন। এবং খাবার আগে পান করবেন। যাদের এসিডিটি সমস্যা আছে তারা সকালে নাস্তার পরে ডিটক্স ওয়াটারটি পান করবেন। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন বানানোর দুই তিন দিন একসাথে বানিয়ে রাখবেন না।প্রতিদিন ফ্রেশ ডিটক্স ওয়াটার পান করবেন।

ডিটক্স ওয়াটার এর উপকারিতা

ডিটক্স ওয়াটার পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আসুন আমরা এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও বলিরেখা দূর করে।
  • শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বার করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে সুস্থ রাখে।
  • ইউরিন ইনফেকশন কমায় ও দেহের দূষিত বজ্র পদার্থ প্রসবের সাথে বের করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন সি-এর ঘাটতি পূরণ করে।
  • হজমে সাহায্য করে ও কষ্ট কাঠিন্য দূর করে।
  • অতিরিক্ত ক্ষুধা কমায় তাতে শরীরের ওজন কমতে সাহায্য করে।
  • চুল শক্ত ও ঝলমলে করতেও সাহায্য করে।
  • গ্যাস্ট্রিকের খুব ভালো কাজ করে। যাদের গ্যাস্ট্রিক আছে তারা এই পানীয় পান করলে গ্যাস্ট্রিক দূর হয়।

ডিটক্স ওয়াটার এর অপকারিতা

ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম অনুযায়ী সঠিকভাবে বানিয়ে প্রতিদিন আপনারা ফ্রেশ ডিটক্স ওয়াটার পান করুন। ডিটক্স ওয়াটার যেমন উপকারী কেমন এর অপকারিতাও রয়েছে। অতিরিক্ত ডিটক্স ওয়াটার খেলে শরীরের সোডিয়াম কমে যায় এতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক সময় ঘুম ঘুম ভাব হয় সারাদিন মনে হবে ঘুমাই থাকি। মাথায় যন্ত্রণা হতে পারে বমি বমি ভাব হতে পারে। এতে শরীরে পানীয় জমে যেতে পারে। 

অতিরিক্ত ওজন কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। ফলে কাজ করতে সমস্যা হতে পারে। ভিটামিন ও খনিজের অভাব দেখা দিতে পারে। যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের জন্য না খাওয়াই ভালো। যাদের এসিডিটির সমস্যা আছে তাদেরও না খায় ভালো। লিভার ও বুকে ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ডিটক্স ওয়াটার না খাওয়াই ভালো।

ওজন কমাতে ডিটক্স ওয়াটার

ওজন কমাতে ডিটক্স ওয়াটার অনেক উপকারী।ডিটক্স ওয়াটার বানানোর নিয়ম অনুযায়ী বানিয়ে এটি পান করুন। শরীরে বিভিন্ন রকম দূষিত বজ্র পদার্থ বের করে দিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদদের মতে দই পুদিনা পাতা শসা ইত্যাদি একসাথে দিয়াতে ওজন কমতে সাহায্য করে। শরীর অতিরিক্ত মোটা ভাব অনেক অসুখ বৃদ্ধি পায়। 

প্রতিনিয়ত আমাদের খাদ্যা অভ্যাস নির্ভর করে আমাদের শরীর বৃদ্ধির কারণ। অনেক রকম জাম ফুড ঠান্ডা পানীয় ভাজা পোড়াইত্যাদি খাবার আমাদের শরীরে চর্বি জমে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে।এতে আমাদের লিভারে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই ডিটক্স বানিয়ে পান করলে লিভারের চর্বি জমা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত ডিটক্স পানি পান করা যাবে না।আপনি বিভিন্ন রকম ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করে পান করতে পারেন ।
  • লেবু ডিটক্স ওয়াটার লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি। একটা লেবু টুকরো করে কেটে শসা টুকরো করে কেটে পানিতে দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে পুদিনা পাতা দিয়ে সারাদিন রেখে দিলে সেটি ডিটক্স পানি হিসেবে পান করা যায়। এতে শরীরের ভিটামিন সি ঘাটতি দূর হয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • আপেল ডিটক্স ওয়াটার শসা ও লেবু টুকরো করে পানিতে মিশিয়ে এতে একটি আপেল টুকরো করে মিশালে সেটি আপেল ডিটক্স ওয়াটার হয়ে যায়। এর মধ্যে দারুচিনিও মেশানো যেতে পারে। এটি শরীরের পদার্থ দূর করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • কমলা ডিটক্স ওয়াটার এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি পাওয়া যায়। শরীরে চর্বি দূর করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • শসা ডিটক্স ওয়াটার এতে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম পাওয়া যায়। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • দারুন চিনি ডিটক্স ওয়াটার শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

লেখক এর শেষ কথা

ডিটক্স পানি বানানোর নিয়ম অনুযায়ী বানিয়ে আপনারা পান করতে পারেন। এতে অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তাই অতিমাত্রায় ডিটক্স পানি পান করা যাবে না যাতে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়।

আশা করি আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু আত্মীয় স্বজন ও অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করুন। আরো উপকৃত পোস্ট পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url