কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়

কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সেটা জানতে হলে আমার এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমার এই পোস্টটি আপনারা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আমি এই পোস্টে আপনাদের জন্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সম্পর্কেও আপনারা জানতে পারবেন ।

মুসলমানদের উৎসবের মধ্যে ঈদুল আযহা একটি উৎসব। যেটি পশু কোরবানির করতে হয়।হালাল পশু যেমন গরু মহিষ উট দুম্বা ভেড়া ও ছাগল এ পশুগুলো কোরবানি করা জায়েজ। কোরবানির মাংস তিন ভাগে বন্টন করতে হবে এবং সেগুলো নিয়ম মেনে গরিব দুখী মিসকিন ভিক্ষুক পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন এবং নিজের জন্য রাখতে হবে।

ভূমিকা

মুসলমানদের ঈদুল ফিতরের মতোই ঈদুল আযহা আরেকটি দ্বিতীয় উৎসব।এই ঈদে পরশু কোরবানি করতে হয়।কোরবানির পশু নিখুঁত হতে হবে।পশু কোরবানির মাংস কয়েক ভাগে ভাগ করতে হয় ।কোরবানির মাংস কয়েক ভাগে ভাগ না করলেও কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু এতে মন মানসিকতার কৃপণতা ভাব প্রকাশ পায়।যেগুলো মেনে আমাদের কোরবানি দিতে হবে কোরবানির চামড়ার টাকা ও গরিব মিসকিনকে দিতে হবে।

কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়

ঈদুল হাজহা একটি কোরবানি ঈদ যেটি ওষুধ পশু কোরবানি করতে হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা সকালে ঈদের নামাজ পড়ে এসে পরশু কোরবানি করবে। নিজ সমর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিবে। পশু কোরবানির পরে এই গোশত ভাগের নিয়ম আছে। গোশত ভাগ করা সঠিক নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে। গোশত ভাগ করার নিয়ম হচ্ছে তিন ভাগে ভাগ করতে হয়।তিনটি ভাগে সমানভাগে ভাগ হবে।

এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের, এক ভাগ গরিব অসহায় মিসকিন এদের ও একভাগ নিজের জন্য।যারা দরিদ্র মানুষের কাছে চেয়ে খায় তাদেরকে কোরবানির মাংস দিয়া কর্তব্য।তার সাথে পাড়া-প্রতিবেশীকে দিয়া উত্তম। কোরবানির গোশত পুরোটাই যদি বিলিয়ে দিয়া যায় তাতেও কোন সমস্যা নাই। আর যদি নিজের কাছে রাখা হয় তাতেও কোন সমস্যা নাই। কিন্তু কোরবানির গোশতে আত্মীয় স্বজন এবং গরিব মিসকিনের হক রয়েছে ।

আজকাল মানুষ কোরবানির গোশত জমা করে রাখে। গরিব মিসকিন কে দিতে চায় না। তাদের গোশত টাও নিজেদের মধ্যেই রেখে দেয়। এতে মন মানসিকতা যে কৃপণতা সেটা প্রকাশ পায়। আর যখন মানুষ এত অসহায় দুর্ভিক্ষ গোস্ত কেনার টাকা নাই এরকম অবস্থায় মানুষের কোরবানির গোশত বিলানো উচিত।নিজের জন্য যে ভাগটা রাখবো সেটা অবশ্যই নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত রাখা দরকার। না হলে বেশিদিন রাখলে খাওয়ার পরে অনেক সমস্যা হতে পারে তাই বেশি দিন সংরক্ষণ করা উচিত নয়।

চামড়া

পরশু কোরবানির পরে চামড়া আলাদা করে সে চামড়া বিক্রি করে করা হয় ।এই চামড়ার বিক্রি করা টাকাটা নিজে খাওয়া উচিত নয়। এই বিক্রি করা চামড়া টাকা এতিমখানা গরিব মিসকিন বা আশেপাশে যারা প্রতিবেশী দরিদ্র আছে তাদেরকে দিয়ে দিতে হয় নিজের কাছে কখনোই রাখতে নেই।

কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে

জিলহজ্ব মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত কোরবানি ঈদ। যার সমর্থ্য আছে সে অবশ্যই কোরবানি করবে তার উপরে কোরবানি করা ফরজ। আর যার সমর্থনায় সে কোরবানি না করলেও কোন সমস্যা নাই। নিজ নিজ সমর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি করা ফরজ। আরে কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে সে সম্পর্কে কিছু বিতর্ক রয়েছে। 

আমরা কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সেটা সম্পর্কে অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা। অনেকেও জানার পরে আমরা কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়। এই নিয়মে ভাগ করি না নিজেরাই নিজেদের মতো করে রেখে দিয়ে। যদিও আমরা সমর্থ্যবান হয় তারপরেও। এতে মন মানসিকতার কৃপণতা বোধ প্রকাশ পায়।কারণ এখন মানুষ ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করে রাখে দীর্ঘদিন যাবত। কেউ বলে মাংস জমে রাখা যাবে না। 

কেউ বলে তিন দিনের বেশি মাংস জমে রাখা যাবে না। আবার অনেকের ধারণা করে যে মাংস ১০ দিনের বেশি রাখা যাবে না। কারো মতে ৬ মাস এই ভাবেই মানুষ ধারণা করে নিয়ম করে নিচ্ছে। কিন্তু মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণের পরে সে মাংস আমরা খেলে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে যাই। যার কারণে কতদিন যাবত রাখা যাবে সেটা দিকে খেয়াল রেখেই মাংস সংরক্ষণ করা দরকার নয়তোবা মাংসটা নষ্ট হওয়ার পরে খাওয়া সঠিক নয়।

ছাগল কোরবানির নিয়ম

যাদের উপর কোরবানি ফরজ হয়েছে তাদের খেয়াল রাখতে হবে পশুটি হালাল হয় এবং কোন ধরনের পশু কোরবানি করা উচিত সেগুলো খেয়াল রেখেই কোরবানি করতে হবে ।সব ধরনের পশু আমরা কোরবানি করতে পারি না। কয়েক কোরবানি করা ফরজ তা হলো ছাগল ভেড়া দুম্বা গরু উট মহিষ। কোরবানি করা এই কয়েকটি পশু কোরবানি করা যায় কিন্তু এদের বিভিন্ন নিয়ম আছে। 

যেমন বয়স দেখতে হয় তাদের কোন ক্ষত আছে কিনা শারীরিক সেগুলো দেখে কোরবানি করার নিয়ম।ছাগলও ভেড়া কোরবানি করতে পারি তাদের বয়স দেখতে হবে এক বছর হয়েছে কিনা এবং দাঁত আছে কিনা। ছোট বাচ্চা কোরবানি করা যাবে না।ছাগলের ভেড়া পরিপূর্ণ বয়স হতে হবে এক বছর নয়তো এক বছরের নিচে হলে কোরবানি করা যাবে না।

কোরবানি পশু কেমন হবে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে ।যে ছাগল বা ভেড়া বা দুম্বা কোরবানি দেয়া হবে সেটি যেন দোষত্রুটি মুক্ত থাকে শুদ্ধ হতে হবে।ছাগল ভেড়া এসব যেকোনো একজনায় কোরবানি দিতে হয়। এটা ৭ ভাগ বা ৫ ভাগে দেয়া যায় না।একটি ছাগল বা একটি ভেড়া একজনই কোরবানি দিবে। এবং এ মাংস সমানভাবে তিন ভাগ করবে। 

এর এক ভাগ নিজের জন্য রাখবে এক ভাগ গরিব মিসকিন তাদের দিবে এবং একভাগ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের দিবে।গরু মহিষ ও উট এগুলোর ক্ষেত্রে কেউ একজন যদি সমর্থ্যবান হয় একজন কোরবানি দিতে পারে।আর যদি সমর্থ্যবান না হয় এগুলোর দাম অনুযায়ী তখন সাত ভাগে বা পাঁচ ভাগে দেয়া যেতে পারে বা তিন ভাগেও দেয়া যেতে পারে।

যেসব পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়

  • যে পশু হাঁটাচলা করতে পারেনা সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
  • যে পশুর চোখে দেখতে পায় না অন্ধ সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
  • যে পশু কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেছে সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
  • যে পশুর দাঁত নাই চিপতে পারেনা খাদ্য খেতে পারে না সে পশু কোরবানিকরা জায়েজ নয় ।
  • যে পশুর শিং ভেঙ্গে গেছে একেবারে উপরে ভেঙ্গে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
  • যে পশু রোগাক্রান্ত যাকে দেখলেই বোঝা যায় সে অসুস্থ সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
  • কোরবানির পশু কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে পশুটির যেন কান ছেড়া কাটা চোখ নষ্ট এগুলো যেন না থাকে নিখুঁত ধরনের পশু হয়।

কুরবানীর সঠিক নিয়ম

ঈদুল আযহা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব। দলে দলে সবাই ঈদগায় গিয়ে নামাজ পড়ে এসে সমর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করে।পশু কোরবানির সময় কেউ একক ভাগে দেয় কেউ তিনভাগ পাঁচ ভাগ সাত ভাগে দেয়।পরশু কোরবানি করার সময় যে জবাই করবে সেটা নিজে করাই ভালো।তবে অনেকেই জবাই করতে পারে না তখন অন্য কেউ যে জবাই করতে পারে তাকে দিয়ে জবাই করে নিবে। 

জবাই করার সময় খেয়াল রাখতে হবে ছুরিটি যেন ধারালো হয়। গলায় যেন চালানোর সময় পশু বেশি কষ্ট না পায়। বেশি ঘষলে কষ্ট পাবে তাই ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হবে।বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলে পশ্চিম দিকে মুখ করে পবিত্র হয়ে জবাই করতে হবে।কোরবানির করার দোয়া আছে দোয়াটি পড়ে জবাই করা উত্তম ।কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সে সম্পর্কেও ভালোভাবে জেনে কোরবানির মাংস ভাগ করতে হবে।

যদি সাত ভাগে কোরবানি করা হয় তাহলে সাতটি ভাগ করে সাতজনাকে দিয়ে দিবে এবং তারা নিজ নিজ দায়িত্বে তিন ভাগে ভাগ করবে। যদি পাঁচ ভাগে হয় তাহলে পাঁচটি ভাগ করবে এবং পাঁচজনকে দিয়ে দিবে তারা নিজ নিজ দায়িত্বে তিন ভাগে ভাগ করে নিবে। যদি তিন ভাগে দেয়া হয় তাহলে গোস্ত তিনভাগ করে নেবে এবং তারা নিজ নিজ দায়িত্বে তিন ভাগে ভাগ করে নিয়ে গোস্ত বিলিয়ে দিবে।

কোরবানির গোশত বন্টনের নিয়ম

কোরবানির গোশত বন্টনের সময় আমরা অনেক সমস্যায় পড়ি। কারণ বুঝতে পারি না কিভাবে বন্টন করব ।এটা অবশ্যই সমান তিন ভাগে ভাগ করতে হবে। এক- তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশী এক তৃতীয়াংশ অংশ গরিব মিসকিন এবংএক তৃতীয়াংশ নিজের কাছে।এভাবে কোরবানির গোশত বন্টন করা উত্তম।

লেখকের শেষ কথা

আশা করি আমার এই পোস্টে পড়ে আপনারা কোরবানির সম্পর্কে জানতে পেরেছেন যে কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় কোরবানি কয় ভাগে দেয়া যায় এবং কেমন পশু কোরবানি করা জায়েজ। আমার এই পোস্টটিতে আমি চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে জানানোর কোরবানির সম্পর্কে বিস্তারিত।

আশা করি আমার এই পোষ্টটি পড়ে আপনারাও উপকৃত হয়েছেন। আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন নতুন নতুন পোস্ট পড়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url