আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম

আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত জানুন আমার এই পোস্টে। ভিনেগারের উপকারিতা ও অপকারী দিকগুলো জেনে আপনারা আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার নিয়ম মেনে খেতে পারেন।ভিনেগারটি ইচ্ছামতো খেলে হবে না এটার নিয়মমাফিক খেতে হবে।আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। 

শারীরিক বিভিন্ন রকম সমস্যা সেগুলো দূর করে আমার এই পোস্টে উপকারী অপকারী সব দিকে ভালো করে আলোচনা করা হয়েছে আপনারা পড়ে আশা করি উপকারিত হবেন। এটি পানির সাথে মিশ্রিত করে খাওয়া দরকার তাই আপনারা শুধু ভিনেগারটা নিয়ে খাবেন না। বিভিন্ন সালাতের সাথে খেতে । আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার সম্পর্কে বিস্তারিত আমরা জেনে নেই।

ভূমিকা

আপেল সিডার ভিনেগার হচ্ছে আপেল কেটে পানিতে দিয়ে গাজন প্রক্রিয়ায় এক ধরনের ভিনেগার। এটি প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন রান্নায় বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ওজন কমাতে ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। যুগের সাথে সাথে আপেল সিডার ভিনেগার পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার এটি সবচেয়ে ভালো বলে জানা যায়। ওজন কমাতে অনেক সহায়তা করে। তবে শারীরিক কোন সমস্যা থাকলে ভিনেগার বেশি খাওয়া যাবেনা।

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার অনেক উপকারী। আপেল সিডার ভিনেগার খেলে ক্ষুধা কম লাগে। রোজ আপেল সিডার ভিনেগার অভ্যাস করলে ওজন কমাতে সাহায্য করে সাহায্য করে অতি দ্রুত। আপেল সিডার ভিনেগারটি তৈরি হয় আপেলের রস।স্বাস্থ্য ও বিশেষজ্ঞের মতে, এটা প্রতিদিন১-২ টেবিল চামচ খাওয়া উচিত প্রতিদিন খাবারের পূর্বে খাওয়া ভালো ওজন কমাতে অনেক উপকারে আসবে।

খাওয়ার নিয়ম প্রতিদিন এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে হাফ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা ডক্টরের পরামর্শ নিতে পারেন এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের আসবে।অনেকে এর সাথে লেবু রস মিশিয়ে খায়। এতে যাদের এসিডিটি রয়েছে তাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ লেবুতে সাইটিক এসিড আছে আর আপেল সিডার ভিনেগার আছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড সে কারণে এই দুটো সময়ে এসিডিটি তৈরি হতে পারে তাই সতর্কতার সাথে খাওয়া উচিত। শুধু গরম পানি দিয়ে আপেল সিডার ভিনেগার খেলে অনেক উপকারে আসবে।

উপকারিতা

  • এসিডিটি দূর হয়।
  • খুদা কম লাগে।
  • ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়।
  • হৃদপিণ্ড ভালো রাখে।
  • রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে।
  • ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
  • পা ব্যথা পেটে ব্যথা গলা ব্যথা ইত্যাদি অসুখ ভালো হয়।

আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম

সকালে ঘুম থেকে উঠে কোন কিছু না খেয়ে হালকা গরম পানিতে ১-২চামচ আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।আপনি যদি ওজন কমানোর জন্যই আপেল সিডার ভিনেগার টি খান তাহলে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস গরম পানিতে এক থেকে দুই চামচ মিশিয়ে খেতে পারেন এতে ইসুবগুলের ভুসি চিয় সিড মিশে খেলে উপকারে আসবে।

তবে লেবুটা যোগ না করলেই ভালো। অনেকেই লেবু যোগ করেন। এটির একটি মাত্রা আছে ২00 মিলিলিটার পানিতে এক চামচ ভিনেগার মিশিয়ে খেতে হবে। তবে অতিমাত্রায় খেলে দাঁতের এনামেলের সমস্যা হতে পারে সেজন্য আপনারা স্ট্র ব্যবহার করতে পারেন। এবং খাবার পরে ভালোভাবে কুলি করে নিয়ে বা দাঁত ব্রাশ করে নিতে পারেন ।

ভিনেগার এর মধ্যে আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার সবচেয়ে উপকারী। এই ভিনেগারটি ওজন কমাতে খুব ভালো কাজ করে। অর্গানিক আপেল চিনি পানি পচিয়ে গাজন প্রক্রিয়ায় ভিনেগার তৈরি হয় ।অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় যা আমাদের বন্ধুর স্বরূপ। আধুনিক ঔষধের জনক হিপোক্র্যাট নানা রকম ক্ষতের স্থানে এ ভিনেগারটি ব্যবহার করতেন।

এই ভিনেগারটি সেবনে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ও পেটের চর্বি কমিয়ে দেয়। বদ হজম থেকে ও মুক্তি মিলে। এতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকায় কোষ্টকাঠিন্য কমাতেসাহায্য করে।চুলের জন্য অনেক উপকারী শ্যাম্পু করার পরে পানির সাথে ভিনেগার মিশিয়ে চলে দিলে চুল খুশকি সমস্যা সমাধান হয় এবং কন্ডিশনের মত কাজ করে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার কারা খাবেন না

  • যাদের ডায়াবেটিস আছে দুই বেলা ইন্সুরেন্স নিতে হয় তারা ভিনেগার খাবেন না। তবে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দিনে ১ বার খেতে পারেন ডাক্তারের পরামর্শ নিলেই ভালো হয়।
  • যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তারা খাবেন না।
  • যাদের দাঁতের সমস্যা আছে দাঁতে গর্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা তারা খাবেন না।
  • যাদের কিডনিতে পাথর আছে তারা সিডার ভিনেগার খাবেন না।
  • অস্ট্রিওপোরেসিস আছে যাদের তারা খাবেন না এটি খেলে তাদের হাড়ের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের আলসার আছে তারাও ভিনেগার খাবেন না
  • যাদের হাইপোক্যালেমিয়া আছে তারা আপেল সিডার ভিনেগারটা খাবেন না খেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

আপেল সিডার ভিনেগার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ভিনেগার হঠাৎ করে খেলে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। এতে দাঁতের সমস্যা হতে পারে যাদের এনামেল সমস্যা রয়েছে দাঁতে গর্ত রয়েছে। আবার যাদের গলাতে সমস্যা রয়েছে। এটি প্রথম দিকে শারীরিকভাবে সমস্যা দেখা দিলেও খেতে খেতে কয়েক দিনের পরে অস্থিরতা কমে যাবে। তাই কোন সমস্যা হলে ভয়ের কিছু নেই ভয়ের কিছু নেই। খাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যাটা কমে আসবে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।যাদের আলসার আছে তারা এটি ব্যবহার করবেন না। আরো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগার কোনটা ভালো

আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার এটি সবচেয়ে ভালো। কারণ এতে মাদার মানে ব্যাকটেরিয়া এখনো জীবিত রয়েছে।যে ব্যাকটেরিয়া গুলা ভালো শারীরিকভাবে কোন ক্ষতি করে না সে ব্যাকটেরিয়ায় আপনি সিডার ভিনেগার উইথ মাদারের রয়েছে । বাংলাদেশে বিভিন্ন ভেজাল যুক্ত ঔষধ কেমিক্যাল সবকিছুই মধ্যে আমাদের খুঁজে নিতে হবে কোনটা ভালো মানের আপেল সিডার ভিনেগার। দেখে নিতে হবে আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার লেখা আছে কিনা। অবশ্যই ভেজাল মুক্ত ভিনেগার কিনতে হবে। তাই ভালো কোন শপে গিয়ে লেখা দেখে ডেট ওভার হয়ে গেছে কিনা সব খেয়াল রেখে কিনতে হবে।

আপেল সিডার ভিনেগার দাম কত

       

                নাম

          পরিমান

                দাম

ইতালীয় আপেল সিডার

ভিনেগার উইথ দি মাদার


      ৫০০মি.লি

            ৬৫০

ব্রাগ অর্গানিক আপেল সিডার

ভিনেগার উইথ দি মাদার


      ৪৭৩ মি.লি

              ৯৫০

ডিসকভারী অর্গানিক আপেল

সিডারভিনেগার উইথ দি মাদার


      ৫০০মি.লি

              ৭৫০

ডি নিগ্রিস অর্গানিক আপেল সিডারভিনেগার উইথ দি মাদার


      ৫০০মি.লি

              ৮০০

আপেল সিডার ভিনেগার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতা                                                                                          

সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ভিনেগার অত্যন্ত উপকারী। অনেকেই এটি ব্যবহার করে থাকে এর ১৫টি উপকা সম্পর্কে   জেনে নেয়া যাক।                         
  • হেঁচকি থেকে মুক্তি পেতে এক চামচ ভিনেগার খেয়ে ফেললে হেঁচকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • পেটে সমস্যা নিরাময়ে আপেল সিডার ভিনেগার অতি উপকারী। পাকস্থলীতে কোন অসুখ থাকলে এটি জুস হিসাবে বা পানির সাথে মিশিয়ে খেলে অনেক উপকারে আসে।
  • গলা ব্যথা দূর করার জন্য আপেল সিডার ভিনেগার গরম পানিতে১/৪ কাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেলে গলা ব্যথা ভালো হয় ইনফেকশন ছড়িয়ে যাওয়ার থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
  • কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ।জাপানেরএক গবেষণা থেকে দেখা গেছে খারাপ কলেস্টরল ধ্বংস করে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে। আপেল সিডার ভিনেগারের অ্যাসিটিক অ্যাসিড খাওয়ার ইচ্ছা কে কমিয়ে দেয় যার কারণে ওজন কমতে সাহায্য করে।
  • বদহজম প্রতিরোধে এটি অনেক উপকারী। এক চামচ মধু এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার গরম কুসুম পানিতে মিশিয়ে খাবারের আধাঘন্টা আগে খেলে বদ হজম দূর হয়।
  • বন্ধ নাক পরিষ্কার করার সময় আপেল সিডার ভিনেগার অনেক উপকারী। এর অ্যাসিটিক অ্যাসিড জীবাণুগুলো ধ্বংস করে মিউকাস কে পাতলা করে আপনার নাক বন্ধ হওয়া দূর করে। সাইনাস সমস্যা জনিত রোগ থাকলেও সারিয়ে দিতে সাহায্য করে।
  • মুখে দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
  • আপেল সিডার ভিনেগার লিভার ভালো রাখে ও অ্যালার্জি দূর করে।
  • এসিডিটির সমস্যা থাকলে আবার সিডার ভিনেগার খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
  • চুলের শ্যামপুর পরে আপেল সিডার ভিনেগার পানি মিশ্রণ করে চুল ধরে চুল ঝরঝরে ও খুশকি মুক্ত হয়।
  • দাঁতের হলদে ভাব থাকলে থাকলে সেটি দূর হয়।
  • এটি টোনার হিসেবেও কাজ করে। মুখ পরিষ্কার করার জন্য যে টোনার ব্যবহার করা হয় আপনি সেটার ভিনেগার লাগালেও এই টোনারের কাজ করে।
  • মুখে ব্রণ থাকলে ব্রণ কমে দিবে এবং ত্বকের দাগ দূর করে। ত্বকের পি এইচ মাত্রা রক্ষায় সাহায্য করে।
  • এটি হাত পা ক্লান্তিতে মেসেজ করলে ক্লান্তি ভাবটা দূর হয়ে যায়।
  • এদের ক্ষেত্রে আফটার সেভেন পর ব্যবহার করা যেতে পারে। সমপরিমাণ পানি এবং আপেল সিডার ভিনেগার একটা বোতলে ভরে ঝাকিয়ে রেখে দিলে সেটা সেভের পরে ব্যবহার করতে পারেন।
  • যাদের আলসার আছে তারা এটি ব্যবহার করবেন না। আরো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগার কতদিন খাওয়া যায়

আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার বা আপেল সিডার ভিনেগার এখন বিভিন্ন রান্না বান্না বেকিং রেস্টুরেন্ট বাসার রান্নায় ব্যবহার করা হয়।আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করার জন্য আপেল পানিতে ডুবিয়ে গাজন প্রক্রিয়ায় অ্যাসিটিক অ্যাসিডের রূপান্তর করে তৈরি করা হয়। এটা আমরা যে কোন রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। 

একটা ভিনেগার যখন নতুন অবস্থায় বোতলে থাকে তখন সেটা স্বচ্ছ থাকে কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা অস্বচ্ছ পরিণত হয় তলানি জমে যায়। এর কারণ হচ্ছে বারবার বোতলের মুখটা খোলার জন্য অক্সিজেন প্রবেশ করে আর অক্সিজেন অ্যাসিড ও সালফার ডাই অক্সাইড নিঃসরণ ঘটায় যার কারণে এটি দুই উপাদান বেরিয়ে আসে। বারবার বোতলের মুখ খোলার কারণে দুই উপাদান বেরিয়ে আসার কারণে ভিনেগারের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায় তাই আপনার সংরক্ষণ করা উচিত।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করি আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারী অপকারী সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনারা আপেল সিডার ভিনেগার খেলে অবশ্যই আপনাদের শারীরিক কোন সমস্যা আছে কিনা সেগুলো জেনে খাবেন।এবং আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার এটি ভালোভাবে দেখে নিবেন আসল না নকল।

আশা করি আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমার এই পোষ্টটি আপনাদের ভাল লাগলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু বান্ধব আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করবেন। আপনাদের উপকারে আসে এমন পোস্ট পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত দিন।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url