বারোমাসি আমের জাত সমূহ জানুন
বারোমাসি আমের জাতসমূহ জানুন এই পোস্টটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।আপনারা অনেকেই বারোমাসি আমের জাত সম্পর্কে অবগত নন। তাই এ পোস্টটি আপনাদের জন্য যেন বারোমাসি আমি জাত সমূহ জানতে পারেন, পাকা আমে কোন অ্যাসিড থাকে আমের উপকারী ও অপকারী সব বিষয়ে এ পোস্টটিতে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
পাকা আমে অনেক রকম ভিটামিন পাওয়া যায়।সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।কিছু সেরা আমের জাত আছে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।আম সবার কাছে অতি প্রিয় একটি ফল। আমকে ফলের রাজা বলা হয়। আম খেতে পছন্দ করেন না এমন কেউ নাই। আমের সিজনে ঘরে আম না থাকলে চলে। তার পরেও সারা বছর বারোমাসি আম পাওয়া যায়।
ভূমিকা
বাংলাদেশের অতি বিখ্যাত গ্রীষ্মকালীন একটি ফল হচ্ছে আম। এ ফলটি খেতে ছোট বড় সকলেই ভালোবাসে। আম খায়না এরকম কোন মানুষই নাই। আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বিভিন্ন রকম আম রয়েছে ।আবার বারোমাস আমের জাত রয়েছে এখন তো যখন তখন আমরা ১২ মাসেই আম খেতে পারি। আমের বিভিন্ন রকম উন্নত জাত আছে যেগুলো বিভিন্ন রকম স্বাদের হয়ে থাকে।
আমার এই পোস্টে আপনাদেরকে বারোমাসি আমের জাত সমূহ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। তার সাথে আম খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা আমের উন্নত জাত ইত্যাদি সম্পর্কে এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতিমাত্রায় আম খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে সেজন্য আমাদের আম খাওয়ার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আমরা সঠিক মাত্রায় আম খেতে পারি ।
পাকা আমে কি কি ভিটামিন আছে
পাকা আমে অনেক ভিটামিন রয়েছে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো উপকারে আসে। পাকা আমে সবরকমই প্রায় ভিটামিন আছে। ভিটামিন, খনিজ ,লবণ, ভিটামিন বি১,ভিটামিন পটাশিয়াম,বি২,ফসফরাস ও থায়ামিন রয়েছে।আশঁযুক্ত আম আমাদের শারীরিক অনেক উপকারে আসে।একটি পাকা আমে রয়েছে ৯০ কিলো ক্যালরিখাদ্যশক্তি পটাশিয়াম থাকে ৪৪ ক্যালরি 27 মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম আরো বিভিন্ন ভিটামিন থাকে।
পানি থাকে ছয় গ্রামের মত এবং আরো যত ভিটামিন আছে সবগুলোই পরিপূর্ণভাবে থাকে যেগুলো আমাদের শরীরে অনেক উপকারে আসে।আমে বিভিন্ন রকম ভিটামিন থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সহজে খাদ্য পরিপাক হয়, আমাদের স্কিন ভালো থাকে, দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে দেহের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
আমের উপকারিতা ও অপকারিতা
আম একটি মিষ্টি জাতীয় ফল।যা সবারই খুব প্রিয় একটি ফল। আম কাঁচা অবস্থাতেও খেতে ভালো লাগে। কাঁচা অবস্থাতে একরকম পুষ্টিগুণ আর পাকাতে আর একরকম পুষ্টিগুণ। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল।আম ছোট বড় সবাই খেতে পছন্দ করে। আর এটি অনেকেই অধিক পরিমাণ খায়।আমে অনেক ভিটামিন থাকায় এটি অনেক উপকারী আবার এর অপকারী দিক রয়েছে। আসুন আমরা জেনে নিই এর উপকারী ও অপকারী দিকগুলো।
আম খাওয়ার উপকারিতা
- দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে আম অনেক উপকারী। ভিটামিন এ কারণে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় চোখের অনেক সমস্যা দূর হয়। আমে ভিটামিন এ রয়েছে তাই এটি চোখের জন্য খুবই উপকারী।
- আমে ভিটামিন সি থাকায় ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ত্বক দাগ মুক্ত কমল রাখতে সাহায্য করে।
- আম বেশি পরিমাণ খেলে খুদা মিটে যায় তখন আর অন্য কিছু খেতে ইচ্ছা হয় না এতে আমাদের শরীরের চর্বি কমতে সাহায্য হয় ।
- আমে আশঁ রয়েছে যা পাকস্থলী পরিষ্কার করতে সাহায্য করে কোষ্ঠকঠিন্য দূর করে হজমে সাহায্য করে।
- আম খেলে রক্ত সল্পতা দূর হয়। শরীর ঠান্ডা থাকে ক্লান্তি দূর হয়।
- আম খেলে শরীরের যে লবণের ঘাটতি হয় সেটি দূর হয়। কারণ অতিমাত্রায় গরমে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে যায় তাতে লবণাক্ত পানিও বের হয় আম সেই লবণ পানিটা ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।
- আম খেলে ঘুম হয় ভাল।
আম খাওয়ার অপকারিতা
আম খাওয়ার যেমন উপকারিতা আছে অপকারিতা ও আছে। আম অনেক সুস্বাদু একটি ফল। সে কারণে মানুষ ইচ্ছামত সেটা খেতে থাকে। কিন্তু কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো না ।মাত্রা অনুযায়ী খাওয়া ভালো। আম অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে তার অনেক অপকারিতা রয়েছে সেগুলো আমরা জেনে নিন।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা অতিমাত্রায় আম না খাওয়াই ভালো। কারণ আমে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
- যারা ডায়েটে আছে তারা আম বেশি না খায় ভালো কারণ আমি অনেক ক্যালরি আছে যার কারণে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
- অতিমাত্রায় আম খেলে ডায়রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমে আশঁ থাকায় এটি কখনো কখনো ডায়রিয়া শুরু করা সম্ভবনা থাকে। তাই মাত্রা অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।
- আম এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রেও অতি ভয়ংকর। অনেক সময় অতিরিক্ত মাত্রায় আম খেলে অ্যালার্জি শুরু হয়ে যেতে পারে ।
- তাই আম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করে আপনারা আম খাবেন। কারণ আপনার শারীরিক কোন সমস্যা হলে তাতে আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন। আপনার অনেক রকম সমস্যার সৃষ্টি হবে তার চাইতে বুঝে আম খাবেন মাত্রা অনুযায়ী।
শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা
আম শিশুদের জন্য উপকারী একটি ফল। এই ফলটি রসালো। আমি অনেক রকম ভিটামিন রয়েছে যেগুলো দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।চোখ ভালো রাখে অ্যামাইনো এসিড যেটি মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায় স্মৃতিশক্তি কার্যকারিতা উন্নতি করে। ফাইবার ও এনজাইম সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজমে সাহায্য করে। ঘুম ভালো হয়। লোহিত রক্তকণিকা থাকায় এটি রক্তস্বল্পতায় অনেক উপকারে আসে।
- বিভিন্ন রকম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে জীবাণুমুক্ত রাখে।কিন্তু শিশুদের আম খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ম-কানুন মেনে খাওয়ানোর দরকার
- শিশুদের আম খাওয়ানোর ক্ষেত্রে জানতে হবে তার বয়সটা কত ৪-৬মাস বয়সের বাচ্চাদের আম বেশি পরিমাণ খাওয়ানো উচিত নয়।
- যে আমে প্রচুর আশ আছে সে আমটা না খাওয়ানোই ভালো কারণ সে কারণে শিশুর ডায়রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে।
- আমে অনেক সময়ই এলার্জি হয় তাই শিশুর এলার্জি যদি থাকে সেক্ষেত্রে আম না খাওয়ানোই ভালো।
- আমকে যত সম্ভব ম্যাশ করে খাওয়াতে হবে যেন গলায় বেঁধে না যায়।
- যে আম গুলো টাটকা আশ কম সে আমগুলো শিশুদের জন্য নির্বাচন করতে হবে।
পাকা আমে কোন এসিড থাকে
আমে বিভিন্ন রকম অ্যাসিড থাকে যেমন সাইট্রিক এসিড, সাকসেসনিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড টারটারিক অ্যাসিড মালিক অ্যাসিড যেগুলো রক্ত সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।আমে বিভিন্ন রকম অ্যাসিড থাকে যেমন সাইট্রিক এসিড, সাকসেসনিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড টারটারিক অ্যাসিড ম্যালিক অ্যাসিড যেগুলো রক্ত সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। সাইট্রিক এসিডের জন্য আম টক লাগে আর ম্যালিক এসিড এর জন্য মিষ্টি লাগে।আম কাঁচা অবস্থাতে বেশি টক লাগে কারণ তখন সাইট্রিক এসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। আর যে আম যত মিষ্টি সে আমি তত বেশি ম্যালিক এসিড থাকে।
উন্নত জাতের আমের নাম
বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম আম রয়েছে। বারোমাসি আমের জাতসমূহ যেমন বিভিন্ন রকম নামের হয়। তেমনি গ্রীষ্মকালীন উন্নত জাতের আমেরও অনেক নাম হয়। খেতে সুস্বাদু রসালো মিষ্টি।বিভিন্ন উন্নত জাতের আমের নামের মধ্যে রয়েছে ক্ষীরশাপাত, গোপালভোগ, হিমসাগর ,লকনা, ল্যাংড়া, ফজলি ,আম্রপালি,গোপালভোগ,হাড়িভাঙ্গা, বারিআম- ৪ ইত্যাদি।আরো অনেক জাতের আম আছে যেগুলো অনেক মিষ্টি রসালো ও সুস্বাদু।
আম্রপালি
এই আমটি মিষ্টি ও সুস্বাদু আকারে বড় হলুদ বর্ণের হয় দেখতে অনেক সুন্দর। এটি এই গাছটি ছোট অবস্থা থেকেই আম ধরতে শুরু করে এটা একটি হাইব্রিড জাতীয় আম নিচের দিকে একটু সূচালো টাইপের থাকে
ফজলি
বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় আম। অনেক মিষ্টি এ আমটি অনেক বড় হয়ে থাকে সুগন্ধযুক্ত আশবিহীন।
এই আমটি জুলাই শেষের দিকে পড়তে শুরু করে আমটি কাঁচা অবস্থায় অনেক মিষ্টি হয়। খেতে সবাই খুব পছন্দ করে।
গোপাল
এই আমটি অনেক মিষ্টি সুগন্ধ যুক্ত এটি দেখতে গোলাকার হলুদ বর্ণের হয় মে মাস থেকে আমটা পাওয়া যায়। এ আমের চাহিদা অনেক বেশি।
হাড়িভাঙ্গা
এই আমটি মূলত রংপুরের বিখ্যাত আম। অনেক মিষ্টি সুস্বাদু। আমটির আকার অনেক বড়। গোলাকার ধরনের হয় একটু কালচে টাইপের কিন্তু সহজে পচে না ।
হিমসাগর
আমটি রং হলদে সবুজ বর্ণের মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। আকারে গোলাকার মসৃণ খোসা পাতলা বিশিষ্ট। জুন মাসে বাজারে পাওয়া যায়।
বারোমাসি আমের জাত সমূহ
আমতো বছরে একবারই ধরে। কিন্তু কৃষিবিদরা অনেক গবেষণা করে বারোমাসি আমের জাত বের করেছেন 12 মাসের আমের যাতে বিভিন্ন রকম জাত আছে বারি আম ১,২বারি আম ৩,৪ হাইব্রিড বিভিন্ন রকম জাতের আম রয়েছে।বারি আম ১ ২ও ৩এগুলো বছরে তিনবার হয়। বারোমাসি যে কোন আম বছরে তিনবার হয়।
এই আম গাছগুলো কলম করে লাগিয়ে চাষ করা হয় বিঘা প্রতি জমিতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই আম বিঘা পতি চাষ করে অনেক নার্সারির মালিকরা লাভোবান হচ্ছে ।এই আমটি নভেম্বর ডিসেম্বর ও মে মাসের গাছে মুকুল আসে। আর মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট মাসে ফল দেয়। আমগুলো কিছুটা সবুজ ।গাছগুলো ছয় থেকে সাত ফুট লম্বা হয়।
খেতে সুস্বাদু এবংমিষ্টি আঁশযুক্ত গাঢ় হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। চার থেকে পাঁচ বছর বয়স থেকেই গাছে আম ধরতে শুরু করে। বাংলাদেশের সব এলাকায় এই আম চাষ করা সম্ভব। বাইরের দেশের বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়।মৌসুমী আমের মতই বারোমাসি আমের জাতের আমগুলো খেতে ভালো লাগে এবং দেখতেও সুন্দর।
লেখক এর মন্তব্য
আম গ্রীষ্মকালীন ফল এর ফলের যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে উপকারিতা ও রয়েছে বেশি। আমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে।আম এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। আমরা বারোমাসি আমের জাত সমূহ জেনে সেগুলো গাছ লাগাতে পারি যার ফলে বারোমাসি আম খেতে পারব। আমে যেমন উপকারিতা আছে তেমন অপকারিতাও আছে। অতিরিক্ত মাত্রায় আম খেলে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
প্রিয় পাঠক আপনার এই পোস্টটি নিশ্চয়ই পড়েছেন। আমার এই পোস্টটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজনদের এর সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন আরো নতুন নতুন পোস্ট করার জন্য। ধন্যবাদ।
সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;
comment url